শেরপুর সীমান্তে হাতি-মানুষের সংঘাত চলছেই। খাবারের সন্ধানে আসা হাতির পাল হানা দিচ্ছে ধান ক্ষেতে। ধান বাঁচাতে গিয়ে হাতির আক্রমণে প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। একইভাবে হাতিকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে নানা কৌশল বেছে নিচ্ছে মানুষ। এতে মারা পড়ছে হাতি।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সীমান্তের কাংশা ইউনিয়নের পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামে একটি ধান ক্ষেত থেকে মৃত হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বনবিভাগ জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে ওই হাতি মারা গেছে। দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে হাতিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
বনবিভাগ জানায়, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ৬ মে পর্যন্ত শুধু রাংটিয়া রেঞ্জে হাতির আক্রমণে প্রাণ গেছে ৪ জনের। আর আজ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণ গেল এক হাতির।
বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খাবারের সন্ধানে আসা একপাল হাতি কয়েকদিন ধরে ঝিনাইগাতী উপজেলার পাশ্চিম কাংশা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ধান ক্ষেতে হানা দিচ্ছিল। শনিবার দিবাগত রাতে ৩০-৩৫ সদস্যের একপাল হাতি দুই থেকে তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে পূর্ব ও পাশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের ধান ক্ষেতে হানা দেয় এবং বোরো ধান বিনষ্ট করে।
খবর পেয়ে বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের একদল বনকর্মী গভীর রাতে বাকাকুড়া গ্রামে যান। পূর্ব বাকাকুড়া গ্রামে হাতি তাড়ানোর সময় তারা খবর পান পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামেও একপাল হাতি ধান ক্ষেতে হানা দিয়েছে।
রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার মকরুল ইসলাম জানান, পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামে যাওয়ার পর তারা দেখতে পান এক পাল উন্মত্ত হাতি স্থানীয় নুহু মিয়ার ধান ক্ষেতের একপাশে দাঁড়িয়ে বিকট শব্দে চিৎকার করছে। অনেক চেষ্টার পর ভোর বেলা হাতির পাল ওই এলাকা ত্যাগ করে। পরে ধান ক্ষেতের কাদা পানিতে গিয়ে তারা একটি হাতিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। মৃত হাতিটি মাকনা এবং এর বয়স প্রায় ৩-৪ বছর। লম্বায় ১২-১৪ ফিট।
ওই বন কর্মকর্তা আরও বলেন, তারা মৃত হাতির পাশে বৈদ্যুতিক তারসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র পেয়েছেন। এতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হাতিটিকে বৈদ্যুতিক ফাঁদে ফেলে মারা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ বলেন, হাতির মরদেহ ময়নাতদন্ত করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট এলে পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।