শেরপুরে নদনদীর পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও পানিবন্দি রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। গত ৪দিনে বন্যার পানিতে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও নকলা উপজেলায় মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দুর্ভোগে রয়েছেন পানিবন্দি এলাকার মানুষজন। এখনও অনেক জায়গাতেই পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সহায়তা পৌঁছানো হয়েছে।
কৃষি বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ বলছে, জেলায় ৪৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমির আমন ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর মাছের ঘের তলিয়ে গেছে ৬ হাজারেরও বেশি। এতে মাথায় হাত পড়েছে আমন ও মৎস্যচাষীদের। সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার অন্তত পৌনে দুই লাখ কৃষক।
যদিও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা ও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
এর আগে ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ভারী বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ীর খলিশাকুড়ির খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়ার ইদ্রিস আলী (৬৬), নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের দুই ভাই আলম (১৭) ও হাতেম (৩০), বাঘবেড় বালুরচরের ওমেজা বেওয়া পানিতে ডুবে মারা গেছেন। এ ছাড়া ঝিনাইগাতীর সন্ধ্যাকুড়া থেকে একজন উদ্ধার হয়েছে। তবে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া নকলা উপজেলায় দুজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, উপজেলার উরফা ইউনিয়নের কুড়েরকান্দায় বন্যার পানিতে থাকা বিদ্যুতের তারে বিদ্যুতায়িত মোক্তার আলী (৫০) নামের একজন মারা গেছেন। অন্যদিকে একই উপজেলার গনপদ্দির গজারিয়া বন্যার পানিতে ডুবে আ. রাজ্জাক নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে জেলার প্রায় সব নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। পানি কমতে শুরু করেছে। এতে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগও বাড়ছে। দুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসন সর্বাত্মক কাজ করছে।