পৌষের অর্ধেক শেষ হচ্ছে কাল। চলতি শীত মৌসুমে দেশের কয়েক জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের দেখা মিললেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তবে নতুন বছরে শীত জেঁকে বসবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার শীতের কুয়াশার সঙ্গে আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা গেছে। পরে দেশের অনেক এলাকায় বৃষ্টিও হয়েছে। এ সূত্রে কমেছে তাপমাত্রাও। তবে যথারীতি দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। সেখানে শীত ও শীতজনিত নানা রোগ বাড়ছে। গতকাল বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এমন মেঘলা আবহাওয়া কেটে যাবে এক দিন পরই। কাল শুক্রবার থেকে জেঁকে বসতে পারে শীত। আর নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই আসতে পারে শৈত্যপ্রবাহ। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় এ শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব থাকতে পারে। তবে ঢাকায় এর প্রভাব থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। কাল শুক্রবার ও শনিবারের দিকে শীত বাড়বে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে কয়েক দিন আগে উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। জানুয়ারির শুরুতে বিভিন্ন এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আভাস রয়েছে।
পৌষে উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে কুয়াশা। পঞ্চগড়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
কনকনে শীতের সঙ্গে দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ২০ হাজারের বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি কুড়িগ্রামে। ঘন কুয়াশা ও শীতে সেখানে জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা সেতুপাড়ের বাসিন্দা সোলায় আলী জানান, মাঠে কাজ ছিল, যেতে পারেননি। এমন ঠান্ডায় কাজ করা যায় না। রাস্তায় অটোরিকশা নিয়ে বের হলেও যাত্রী পাচ্ছেন না বলে জানান চালক আব্দুস সালাম। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সেখানে মোট ভর্তি থাকা ৩৫০ রোগীর মধ্যে শিশু রয়েছে ১৫০টি। বেশিরভাগই নিউমোনিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিপন জানান, দু-এক দিন ধরে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঠান্ডায় বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।