শীতার্তদের পৌনে ৭ লাখ কম্বল দেবে সরকার

0
6
সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীত
কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীত। পৌষের শুরু থেকেই সারাদেশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এ পরিস্থিতিতে ৬ লাখ ৭৯ হাজার কম্বল দেওয়া হবে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে। এ কম্বল কিনতে আট বিভাগের ৬৪টি জেলার ৪৯৫টি উপজেলা ও সব পৌরসভার জন্য ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
 
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
 
এবার শীত মৌসুমের শুরুতেই মন্ত্রণালয় থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলায় শীতার্তদের মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যে ১৫ হাজার ২৫০টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
 
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে বরাদ্দ করা কম্বল যথাযথভাবে বিতরণ এবং মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব আর্থিক বিধিবিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের। একই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে কম্বল ক্রয় করে দুস্থদের মাঝে বিতরণ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
এদিকে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দেশে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২ জানুয়ারি সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
 
তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
 
প্রচণ্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে রাতে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
 
শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্তের পরিমাণ। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।
 
অপরদিকে গতকালের ন্যায় আজও দেখা নেই সূর্যের। বৃষ্টির মতো টিপটিপ করে ঝরছে কুয়াশা, সঙ্গে হিমেল হাওয়া। সবমিলিয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন।
 
ভোর থেকেই রাজধানী ঢেকে গেছে ঘন কুয়াশায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। হেডলাইট জ্বালিয়েও মিলছে না সুফল।
 
সরেজমিনে কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, উত্তরা, বিমানবন্দর ও খিলক্ষেতসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির মতো ঝিরিঝিরি কুয়াশায় ভিজে গেছে রাস্তাঘাট। যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। তবে ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা তুলনামূলক কম। আর যারাই জীবিকার টানে বের হচ্ছেন বৃষ্টির মতো কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় পড়ছেন ভোগান্তিতে। গরম পোশাক গায়ে জড়িয়েও যেন রেহাই মিলছে না।
 
তেজগাঁও রেলস্টেশনের পাশে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছিলেন কয়েকজন শ্রমজীবী মানুষ। তারা বলেন, প্রচণ্ড শীত লাগার কারণে আগুন জ্বালিয়ে গরমের তাপ নিচ্ছি। প্রচণ্ড শীত থাকলেও আগুন জ্বালানোর পরে কিছুটা ভালো লাগছে।
 
কারওয়ান বাজার এলাকায় এই প্রতিবেদকের কথা হয় রিকশাচালক আব্দুল মজিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে ঠিক, তাই বলে ঘরে বসে থাকলে হবে? খাবো কী? বৌ-বাচ্চারা কষ্ট পাবে, আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো? এটা হতে পারে না। তাইতো বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।
 
এক টুকরো গরম কাপড় আর সূর্যের মান ভাঙার দিকে তাকিয়ে আছেন মোহাম্মদপুর এলাকার ছিন্নমূল মানুষ। তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, শীতে কষ্ট হচ্ছে। গরম কাপড় আর কম্বল হলে ভালো হতো। কিন্তু তা কেনার সামর্থ্য কোথায়?
 
বিদ্যমান আবহাওয়া আরও কিছুদিন অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। যদিও ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশের কোথাও কোথাও তীব্র শীত অনুভূত হতে পারে।
 
এতে আরও বলা হয়, এ সময় মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এতে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.