শিশুর ঘামাচি রোধে করণীয়

0
131
শিশু

প্রচণ্ড গরমে মানুষ নানাভাবে কষ্ট পায়। বিশেষ করে ত্বকের নানা সমস্যা ও ঘামাচি যন্ত্রণাময় হয়ে ওঠে। শিশুদের মধ্যে গরমকালে ঘামাচির সমস্যা দেখা দেয় বেশি। ঘামাচি থেকে বড় কোনো সমস্যা না হলেও এর জ্বালা, ত্বকে চুলকানিতে কষ্ট পায় তারা।

কয়েক মাসের শিশু থেকে শুরু করে বিদ্যালয়গামী যেকোনো বয়সের শিশুই ঘামাচিতে আক্রান্ত হতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে মিলিয়ারিয়া রুব্রা, মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টলাইনও বলা হয়। পেট, বুক, ঘাড়, নিতম্ব ও ভাঁজযুক্ত স্থানে ঘামাচি বেশি হয়ে থাকে।

শরীরে অধিক ঘামের কারণে ত্বকের রোম ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে ঘাম বেরোতে পারে না। তখন ঘামাচি হয়। বাচ্চাদের রোম ছিদ্র ছোট হওয়ায়, তাদের প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ঘামাচি বেশি হয়ে থাকে। ঘামাচি ছোট ছোট লাল রঙের ফোঁড়ার মতো দেখায়। এর ফলে ত্বকে চুলকানি হয় ও বাচ্চারা কাঁদে। কাপড়ে ঘষা খেলে জ্বালা বাড়ে।

যা করতে হবে

ঘামাচি যাতে না হয়, সে জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেন। খরতাপ থেকে দূরে থাকুন ও ত্বক শুকনা রাখুন। শিশুর পোশাক খুলে কিছুক্ষণ খালি গায়ে রাখতে পারেন। প্রতিদিন ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে গোসল করান। আবার ভেজা কাপড় দিয়ে গা মুছিয়েও পরিষ্কার করতে পারেন।

ঢিলেঢালা ও সুতির কাপড় পরাবেন। ফ্যান ছেড়ে দিন ও জানালা খুলে রাখুন, যাতে ঘরে বাতাস চলাচল করে।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ক্রিম ব্যবহার করবেন না। বাচ্চারা যাতে প্রাকৃতিক হাওয়া পায়, সে দিকে লক্ষ রাখুন।

প্রচুর পানি খাওয়াবেন। প্লাস্টিকের স্তরবিশিষ্ট ডায়াপার পরাবেন না।

ঘাড়, বাহুমূল, জঙ্ঘা ও ভাঁজ হয়—এমন অংশে ঘাম বেশি জমে। তাই এসব স্থান ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে দিন। স্থানগুলো যাতে শুকনা থাকে, সে দিকে লক্ষ রাখবেন।

যদি ঘন ঘন ঘেমে যায়, তাহলে তাদের ত্বক ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিন। ত্বক শুকনা রাখার চেষ্টা করুন।

চিকিৎসা

চুলকানি ও জ্বালা কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়ে সাময়িক স্বস্তি হতে পারে। বেবি ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘামাচিতে লাল ভাব, ঘা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো কিছুদিন অয়েনমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

এ ছাড়া একধরনের লোশন রয়েছে, যা ঝাঁকিয়ে ঘামাচি আক্রান্ত শরীরে ঘণ্টাখানেক লাগিয়ে রেখে সেটি ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে এ রকম তিন-চার দিনের বেশি করা যাবে না।

যদি ফোসকা, ঘা, ফোঁড়া হয়ে যায় বা ত্বকে আরও নানা সমস্যা দেখা দেয়, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়াতে হবে।

ডা. জাহেদ পারভেজ,সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.