সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে আরাফাত আমিন তমাল নামে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৪ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দূর-রে-শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে কলেজের প্রভাষক ডা. রায়হান শরীফ কর্তৃক শিক্ষার্থীকে গুলি করা সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্তারিত তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনকে সদস্য করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিকে বর্ণিত বিষয়ে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকেল ৩টায় ফরেনসিক মেডিসিন আইটেম ক্লাস চলাকালীন শিক্ষার্থীকে গুলির ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডা. রায়হান শরিফ বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের কুপ্রস্তাব ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি ডা. রায়হান শরিফ কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক হওয়ার সত্ত্বেও ফরেনসিক বিভাগে ক্লাস নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া ক্লাস চলাকালীন ছাড়াও প্রায় সময়ই তিনি পিস্তল নিয়ে চলাফেরা করতেন।
আজ বিকেলে ক্লাস চলাকালীন দেশীয় পিস্তল ও ১০ থেকে ১৩টা দেশীয় ধারালো চাকু নিয়ে হঠাৎ করে ওই শিক্ষক অষ্টম ব্যাচের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন। পরে তমালের চিৎকারে সবাই এগিয়ে আসলে ডা. রায়হান শরিফকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ ছাত্র তমালকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় সন্ধ্যায় শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে আটক করেছে পুলিশ। সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হান্নান মিয়া বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ থেকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিলেই সেটা এজাহার হিসেবে নিয়ে মামলা দায়ের করা হবে। মামলা হলে সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।