বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার আর নেই। আজ বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। যতীন সরকারের ছেলে সুমন সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।
যতীন সরকার বেশ কয়েক মাস ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলি আর্থ্রাইটিসে ভুগছিলেন। জুন মাসে বেশ কিছু কারণে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাঁকে ময়মনসিংহে তাঁর মেয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সম্প্রতি তাঁকে ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ময়মনসিংহ জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ বাহার মজুমদার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জানান, বেলা ২টা ৪০ মিনিটে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তাঁর মৃত্যু হয়। এখন লাশ হাসপাতালেই আছে। সেখান থেকে জেলার উদীচী কার্যালয়ে বিকেল ৪টায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। পরে সেখান থেকে নিজ জেলা নেত্রকোনায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।
যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোনার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক সুদীর্ঘকাল ধরে মননশীল সাহিত্যচর্চা, বাম রাজনীতি এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
লেখক হিসেবে যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক, ২০০৫ সালে ‘পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু দর্শন’ গ্রন্থের জন্য প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থপুরস্কার, ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন।
৪২ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় থেকে ২০০২ সালে অবসর গ্রহণের পর যতীন সরকার স্ত্রী কানন সরকারকে নিয়ে শিকড়ের টানে চলে যান নিজ জেলা নেত্রকোনায়। সেখানে শহরের সাতপাই এলাকার নিজ বাড়িতেই থাকতেন।