রায়ের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা বলেন, এই রায়ের ফলে মায়ের অধিকারও আংশিক প্রতিষ্ঠিত হলো। আর মাতা-পিতার পরিচয়হীন যেকোনো শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত হলো।
‘বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের লেখাপড়া’ শিরোনামে ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষ ২০০৯ সালে ওই রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ আগস্ট রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, এস এম রেজাউল করিম ও আইনজীবী আয়শা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
রায়ের পর আইনজীবী আয়শা আক্তার বলেন, রাজশাহী বোর্ডের অধীন এসএসসির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণে বাবার নাম দিতে না পারায় এক শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তখন শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে বাবা এবং মায়ের নাম লেখা বাধ্যতামূলক ছিল। বৈষম্যমূলক এই বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়েছিল। অভিভাবক হিসেবে এখনো শিক্ষাক্ষেত্রের প্রতিটি স্তরে বাবা এবং মায়ের নাম লিখতে হয়। রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, বাবা অথবা মা অথবা আইনগত অভিভাবকের নাম উল্লেখ করে রেজিস্ট্রেশনসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সব ফরম পূরণ করা যাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সব শিক্ষা বোর্ডের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে বাবা অথবা মা অথবা আইনগত অভিভাবক হিসেবে যেকোনো একটি পরিচয় উল্লেখ করে ফরম পূরণ করা যাবে।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বলেন, যখন রিটটি করা হয়, তখন শিক্ষাক্ষেত্রে অভিভাবকের ঘরে তথ্য হিসেবে বাবার নাম লেখা বাধ্যতামূলক ছিল। এরপর মায়ের নাম উল্লেখ করতে হতো। ফরমে অভিভাবক হিসেবে শুধু বাবার নাম উল্লেখ করা অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবহৃত সব ফরম পূরণে অভিভাবকের ঘরে বাবা অথবা মা অথবা আইনগত অভিভাবক শব্দ বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যমান ফরমে পূরণে বাবা অথবা অভিভাবকের নাম উল্লেখ করার সুযোগ রয়েছে।