শিক্ষকের কুপ্রস্তাব ও হুমকি, নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিলেন ছাত্রী

0
11
শিক্ষকের কুনজরে পড়ে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার এক কলেজ ছাত্রী

শিক্ষকের কুনজরে পড়ে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার এক কলেজ ছাত্রী। আগুনে ওই শিক্ষার্থীর শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং তাকে বাঁচাতে গিয়ে এক সহপাঠীও ৭০ শতাংশ পুড়ে আহত হয়েছেন। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওড়িশার ফকির মোহন কলেজের ওই ছাত্রীকে বারবার কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তার বিভাগীয় প্রধান। শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত না হলে ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল তাকে।

ওড়িশার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ বলেন,‌ সংশ্লিষ্ট কলেজের অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইতোমধ্যে। তাকে এবং কলেজের অধ্যক্ষকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করেছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ১ জুলাই ওড়িশার ফকির মোহন কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সমন্বিত বি.এড প্রোগ্রামের ওই ছাত্রী। অভিযোগে তিনি বলেন, বিভাগের প্রধান সমীর কুমার সাহু তাকে অনৈতিক ‌‘সুবিধা’র জন্য চাপ প্রয়োগ এবং হুমকি দিয়ে আসছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলেছে, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওই ছাত্রীকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পরে শনিবার (১২ জুলাই) ওই ছাত্রী ও আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী কলেজের গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। সহপাঠীরা বলছেন, বিক্ষোভ চলাকালীন ওই ছাত্রী হঠাৎ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের কাছাকাছি এলাকায় গিয়ে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, ওই ছাত্রী শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর কলেজের একটি করিডোরের দিকে দৌড়ে যান। সে সময় এক সহপাঠী তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পরে ওই ব্যক্তির টি-শার্টে আগুন ধরে যাওয়ায় তিনি সরে যান। পরে অন্যরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।

কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ বলেন, ওই ছাত্রীর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছিল এবং অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ‘আজ ওই ছাত্রী আমার অফিসে এসে জানায়, সে মারাত্মক মানসিক চাপে রয়েছে। সে চায় আমি সাহুকে অফিসে ডাকি। আমি তাই করেছিলাম। আমি ছাত্রী ও শিক্ষক উভয়কেই জানিয়ে দিই, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষক সাহু অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং ছাত্রীও তার বক্তব্যে অটল ছিলেন।’

এদিকে ওই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টা করার পর কলেজে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বালাসোরের পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রমাণ সংগ্রহে একাধিক দল কাজ করছে। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে অপর একজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে তারা দুজনই ভুবনেশ্বরের এইমসে চিকিৎসাধীন আছেন।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.