দেশের সবচেয়ে বড় এয়ারপোর্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণে অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম মাকসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও জাল জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে জানিয়ে দুদক মহাপরিচালক বলেন, থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পে ৭ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকায় বৃদ্ধি করা, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি স্থানীয়ভাবে ক্রয় করে বিদেশ থেকে ক্রয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, সয়েল টেস্টে অনিয়ম ও নকশা পরিবর্তন করে ৯০০ কোটি টাকা লোপাট, প্রকল্পের তিনটি বড় কাজ অন্য ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রধান বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ আছে দরপত্রে ইউরোপীয় মানের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদির উল্লেখ থাকলেও চীন ও কোরিয়ার নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদি সংযোজন করা হয়। সিলিংয়ের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) খুশি করার জন্য অযৌক্তিক কাজ করে ১২ কোটি টাকা অপচয়সহ সিন্ডিকেট করে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৭ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা- জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং। ২০২৩ সালে অক্টোবর মাসে এটির আংশিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।