রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র চায়। এর বিনিময়ে পিয়ংইয়ংকে খাদ্যপণ্য দিতে চায় মস্কো। এসব বিষয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল উত্তর কোরিয়ায় যাচ্ছে। এমন দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি।
জন কিরবি বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া অস্ত্র চুক্তি করলে তা হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজল্যুশনের লঙ্ঘন।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তুলেছিল, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ও রুশ ভাড়াটে সেনাদল ভাগনারকে অস্ত্র সরবরাহ করছে উত্তর কোরিয়া। তবে পিয়ংইয়ং এর আগে সেসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জন কিরবি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পিয়ংইয়ং ও মস্কোর মধ্যে নতুন একটি অস্ত্র চুক্তির বিষয়ে জানতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, ‘আমরা আরও জানতে পেরেছি রাশিয়া উত্তর কোরিয়ায় একটি প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে এবং অস্ত্র–গোলাবারুদের বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে খাদ্যপণ্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।’
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতা করার অভিযোগে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় স্লোভাকিয়ার একজন নাগরিককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই ব্যক্তির নাম অ্যাশট মিকিরৎশ্চেভ (৫৬)। তিনি একটি চুক্তির ব্যবস্থা করেন, যার মাধ্যমে ২০২২ সালের শেষ থেকে ২০২৩ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত জাহাজে করে রাশিয়ায় অস্ত্র পাঠায় উত্তর কোরিয়া। এর পরিবর্তে পিয়ংইয়ং নগদ অর্থ, বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ, অন্যান্য পণ্য ও কাঁচামাল পেয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশগুলোর একটি উত্তর কোরিয়া। কয়েক দশক ধরে খাদ্যসংকটে দেশটি। গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শেষে উত্তর কোরিয়ায় ভয়াবহ এক দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।
উত্তর কোরিয়ায় একই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বিশেষজ্ঞরা দেশটিকে সতর্ক করে জানান, উৎপাদন অনেক কম হওয়ায় ভয়াবহ এক খাদ্যসংকটের মুখে উত্তর কোরিয়া। বিরূপ আবহাওয়া, সীমান্তে কড়াকড়ি ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়ার এ অবস্থা।
উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের করা জরিপে দেখা গেছে, ২০২১ সালের চেয়ে ২০২২ সালে উত্তর কোরিয়ায় ১ লাখ ৮০ হাজার টন খাদ্য কম উৎপাদন হয়েছে।