শরীরের যেসব সমস্যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়

0
17
হৃদরোগ

হৃদরোগ এখনো বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তবে সুখবর হলো এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। করোনারি হৃদরোগ সাধারণত তখন ঘটে, যখন হৃদপিণ্ডে রক্ত বহনকারী ধমনীগুলো সংকুচিত বা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ধমনীতে চর্বি বা প্লাক জমে এই অবরোধ সৃষ্টি হয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এথেরোস্ক্লেরোসিস বলা হয়। ফলে হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ কমে গিয়ে বুকে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাক এমনকি হার্ট ফেইলিওরও হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ

উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিণ্ড ও ধমনীর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এতে ধমনীর দেয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চর্বি জমার ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত ফলো-আপ, ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা হৃদরোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। PubMed Central–এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসা না করলে তা হৃদরোগের কারণ হতে পারে।

উচ্চ কোলেস্টেরল

অত্যধিক LDL বা খারাপ কোলেস্টেরল ধমনীর ভেতরে জমে প্লাক তৈরি করে, যা রক্তপ্রবাহে বাধা দেয়। ফল, শাকসবজি ও গোটা শস্যের পরিমাণ বাড়ালে শরীরের ক্ষতিকর চর্বি কমে যায়। গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, মোট কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করোনারি হৃদরোগের (CHD) অন্যতম শক্তিশালী ঝুঁকি।

ডায়াবেটিস

রক্তে অতিরিক্ত শর্করা রক্তনালী ও স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা হ্রাস করে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ওষুধের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনারি আর্টারি ডিজিজ (CAD) ডায়াবেটিস রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার অন্যতম কারণ।

ধূমপান ধমনীর অভ্যন্তরীণ আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত করে ও শরীরে রক্ত প্রবাহ ও অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয়, ফলে হৃদপিণ্ডে চাপ বৃদ্ধি পায়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের গবেষণায় বলা হয়েছে, ধূমপান করোনারি ধমনী রোগের (CAD) একটি প্রধান ঝুঁকির কারণ।

স্থূলতা

বিশেষ করে পেটের অংশে অতিরিক্ত ওজন বহন করলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত ব্যায়াম ও সচেতন খাদ্যাভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা

অলস জীবনযাপনও হৃদরোগের বড় ঝুঁকি। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা হৃদপিণ্ডকে শক্তিশালী করে ও রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে। তাই শারীরিক পরিশ্রমমূলক অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং নিয়মিত সক্রিয় থাকুন।

উল্লেখ্য
সুস্থ হৃদপিণ্ডের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম, পরিমিত খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান পরিহার এবং রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণই হতে পারে দীর্ঘ জীবনের মূল চাবিকাঠি।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.