শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে আলোচনা শুরু হবে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই কথা জানান। রাজধানীর হাইকোর্ট গেটের সামনে স্থাপিত স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে গড়া শিক্ষা শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে উপদেষ্টা এই শ্রদ্ধা জানান।
শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আমরা দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। নতুন ব্যবস্থায় বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না বলে নিশ্চয়তা দেন তিনি।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করবেন। একই সঙ্গে সংস্কার কমিশনের সদস্যরা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শরিকরা বৈঠকে অংশ নেবেন।
এনিয়ে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া হবে। ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ইতোমধ্যে অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। কমিশনগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারের কথা বলেছে, যা আগামী নির্বাচনের আগে করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ছয় সংস্কার কমিটি দুই হাজার সুপারিশ করেছে। কিছু কিছু সংস্কার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে করা হবে। এরই মধ্যে কিছু সংস্কার কার্যক্রমের বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।
অযথা কালক্ষেপণ করে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই বলেও এ সময় জানান আসিফ নজরুল। এদিকে, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এর পরে স্মৃতি স্তম্ভে শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র পরিষদ, ৮২-৯০ ছাত্র-আন্দোলনের নেতাকর্মীরা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ৯০ এর ডাকসু সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য, পাহাড়ি ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রসঙ্গত ১৯৮২ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকার একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করে।
প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিতে নিহত হন জাফর, জয়নাল, দীপালী, মোজাম্মেল, আইয়ুব ও কাঞ্চন। আহত হন আরও অনেকে। ছাত্র-জনতার তখনকার সেই আন্দোলনের মুখে বাতিল করতে হয়েছিল সেই শিক্ষানীতি। সেই কারণে ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।