বর্তমান শিক্ষাপঞ্জি অনুসরণ করে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপলক্ষে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে টানা ২০ দিনের ছুটি। তবে, এরই মধ্যে আলোচনায় আছে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারটি। এ অবস্থায় সাপ্তাহিক ছুটি আবারও দুইদিন কার্যকর করা হলে বছরের শুরুতে ও মাঝামাঝিতে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে দুই দফায় যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা পূরণে বেগ পেতে হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। আর তাই বিষয়টি নিয়ে নতুনভাবে পরিকল্পনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইঙ্গিত মিলেছে শিক্ষাপঞ্জিতে কাটছাঁট করে চলমান ২০ দিনের টানা ছুটি কমিয়ে আনার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র বলছে, ঈদের পর পুনরায় শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে একইসঙ্গে শিখন ঘাটতি পূরণে গরমের ছুটি কমানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে চলমান ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই খুলে দেওয়া হতে পারে সব স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা।
মাধ্যমিক-১ শাখার একজন উপ-সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বছরের শুরুতে তীব্র শীত ও মাঝামাঝি সময়ে টানা তাপদাহের কারণে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়। নতুন কারিকুলামে জুলাই মাসে যে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন হবে, তার প্রস্তুতিও ভালো হয়নি। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করতে পারেনি। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২ জুলাই পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। তবে অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৩ জুন পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে। অর্থাৎ, ২৪ জুন থেকে তারা ক্লাস নেবেন। ওইদিন অথবা একদিন আগে বা পরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনা আসতে পারে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে অফিস খুললে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
মাধ্যমিক-২ শাখার আরেকজন সিনিয়র সহকারী সচিব বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নিজে ঈদের পর পুনরায় শনিবারের ছুটি ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন। সেটা করলে ক্লাস কমে যাবে। তাই শিখন ঘাটতির বিষয়টি বিবেচনা করে গ্রীষ্মের ছুটি কমানোর আলোচনা হয়েছে।
সেক্ষেত্রে কবে নাগাদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ১৯ বা ২০ তারিখের মধ্যে এ নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এটা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
চলতি বছরের শিক্ষাপঞ্জি অনুসারে এবার ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয়েছে ১৩ জুন, যা চলার কথা আগামী ২ জুলাই পর্যন্ত। তবে ছুটি কমানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে গেলে আবারও শিক্ষাপঞ্জিতে কাটছাঁটের প্রয়োজন পড়বে।