লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী আইসিজের প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালাম

0
8
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ বিচারক নাওয়াফ সালাম
লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ বিচারক নাওয়াফ সালাম। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে তাকে নতুন মন্ত্রিসভা ও সরকার গঠনের নির্দেশও দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
 
প্রেসিডেন্ট আউনের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রায় দুই বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটল লেবাননে। নাওয়াফ সালামের এ মনোনয়নকে মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে জর্জরিত এ দেশটির জন্য চমকপ্রদ পরিবর্তন বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা। এর প্রধান কারণ, গত দুই বছর ধরে লেবাননে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতাসীন ছিল এবং মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান অস্থিরতা সামাল দেওয়ার মতো শক্তি সেই সরকারের ছিল না। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে খালি ছিল লেবাননের প্রেসিডেন্টের পদও।
 
সৌদি আরবের জোরালো চাপের জেরে গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) লেবাননের পার্লামেন্টে এমপিদের ভোটের ভিত্তিতে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন আউন। তারপর নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণের জন্য সোমবার ফের ভোট দেন এমপিরা।
 
লেবাননের পার্লামেন্টের মোট আসনসংখ্যা ১২৮টি। এর মধ্যে ৮৪টি ভোট পেয়েছেন নাওয়াফ সালাম। তিনি বর্তমানে লেবাননের বাইরে আছেন, তবে মঙ্গলবারের (১৪ জানুয়ারি) মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
 
লেবানন মূলত মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত দেশ। মুসলিমদের মধ্যে সুন্নিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়াপন্থি মুসলিমও রয়েছেন। এ কারণে দেশটির সংবিধানে শিয়া-সুন্নি মুসলিম এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় প্রতিনিধিত্ব ও ভারসাম্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সংবিধান অনুসারে, লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী এবং মন্ত্রিসভায় শিয়া-সুন্নিদের ভারসাম্য অবশ্যই থাকতে হবে।
 
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দুবার লেবাননের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিলেন নাওয়াফ সালাম। তিনি ব্যাপকভাবে একজন সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত। তিনি একজন সুন্নি মুসলিম। আর শুধু সুন্নি মুসলিমরাই লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
 
উল্লেখ্য, আইসিজের প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলা এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন নাওয়াফ সালাম। তার প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার বিষয়টিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করেছে লেবাননের কিছু সংবাদমাধ্যম।
 
এদিকে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত শিয়া রাজনৈতিক দল আমালের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে সালামের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টিকে। এ ব্যাপারে হিজবুল্লাহর সংসদীয় ব্লকের নেতা মোহাম্মদ রাদ বলেন, সালামকে মনোনীত করার পদক্ষেপ দেশে ‘বিভাজনের’ বীজ বপন করেছে। আশা করি, মন্ত্রিসভা দেশের স্বীকারোক্তিমূলক ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিকে সম্মান করবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.