লিভারপুলের উদ্‌যাপনে কেঁপে উঠল মাটি, অ্যানফিল্ডে ভূমিকম্প

0
17
লিভারপুলের শিরোপাজয়ের উদ্‌যাপন ছিল বাঁধনহারা।রয়টার্স

লিভারপুল সমর্থকেরা অ্যানফিল্ডে প্রিমিয়ার লিগ জয় উদ্‌যাপন করতে এমনই উত্তেজনায় ফেটে পড়েছিলেন যে, সেই উল্লাসে ভূকম্পন সৃষ্টি হয়েছিল। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। লিভারপুল সমর্থকদের ভূকম্পন সৃষ্টির এই খবরটি দিয়েছে গবেষকেরা, যাঁরা ম্যাচের সময় অ্যানফিল্ডে উপস্থিত থেকে মাটির কম্পন রেকর্ড করেছেন।

রোববার অ্যানফিল্ডে টটেনহাম হটস্পারকে ৫–১ গোলে হারিয়ে ২০২৪–২৫ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করে লিভারপুল। সেদিন লিভারপুলের শিরোপা জয়ের মুহূর্ত দেখতে অ্যানফিল্ড গ্যালারিতে ছিলেন ৬০ হাজার ৪১৫ জন দর্শক। ম্যাচে লিভারপুলের একেকটি গোলে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস অ্যানফিল্ডে কম্পন সৃষ্টি করে বলে জানিয়েছেন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ, ওশান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের একদল গবেষক ভূমিকম্প নির্ণয়ের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে মাঠে উপস্থিত ছিলেন। গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, চিলি ও ইতালির মতো ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির সাহায্যে গবেষকেরা ম্যাচের বিভিন্ন মুহূর্তে মাঠের ভূমির নড়াচড়া পরিমাপ করেন। এতে দেখা যায়, ৬ বার গোলের পর অ্যানফিল্ডের মাটি কেঁপে উঠেছে।

মাক অ্যালিস্টারের গোলের পর সবচেয়ে বেশি কম্পন হয়েছে।
মাক অ্যালিস্টারের গোলের পর সবচেয়ে বেশি কম্পন হয়েছে। এএফপি

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কম্পন তৈরি হয়েছে অ্যালেক্সিস মাক অ্যালিস্টারের গোলে। ম্যাচের ২৪তম মিনিটের গোলটিতে লিভারপুল ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল। ম্যাচে প্রথম গোলটি টটেনহাম করেছিল বলে তখনই প্রথমবার ম্যাচে এগিয়ে যায় লিভারপুল। রিখটার স্কেলে ম্যাক আলিস্টারের গোল–পরবর্তী কম্পন মাত্রা ছিল ১.৭৪।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কম্পন ছিল মোহাম্মদ সালাহর ৬৩তম মিনিটের গোলে—১.৬০। এ ছাড়া কোডি গাকপোর গোলে ১.০৩, ডেসটিনি উদোগির আত্মঘাতী গোলে ১.৩৫ এবং লুইস দিয়াজের গোলে ০.৬৪ মাত্রার ভূকম্পন সৃষ্টি হয়। দিয়াজের গোলটি অবশ্য পরে ভিএআরে বাতিল হয়ে যায়।

লিভারপুলের শিরোপাজয়ের মুহূর্ত দেখতে মাঠে ছিলেন ৬০ হাজারের বেশি দর্শক।
লিভারপুলের শিরোপাজয়ের মুহূর্ত দেখতে মাঠে ছিলেন ৬০ হাজারের বেশি দর্শক। রয়টার্স

গবেষণাটি পরিচালনা করেন ড. আন্তোইন সেপ্তিয়ার, ড. ফারনাজ কামরানজাদ এবং অধ্যাপক বেন এডওয়ার্ডস। গবেষণার ফল নিয়ে কামরানজাদ বলেন, ‘এগুলো ছিল ছোট ছোট কম্পন, যেগুলো স্ট্যান্ডে থাকা দর্শকদের অনুভব করার মতো শক্তিশালী না হলেও অ্যানফিল্ডে একটি স্পষ্ট এবং স্থায়ী ছাপ রেখে গেছে।’ অধ্যাপক এডওয়ার্ডস বলেন, ‘প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের মতোই এই গোলগুলো মাটিতে কম্পনের সৃষ্টি করেছিল, যা লিভারপুল সমর্থকদের নিখাদ আবেগ থেকে উদ্ভূত।’

লিভারপুলের এবারের শিরোপাটি ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে ২০তম হলেও প্রিমিয়ার লিগের সাড়ে তিন দশকের মধ্যে মাত্র দ্বিতীয়। এর মধ্যে প্রথমটি (২০২০) জয়ের সময় করোনার কারণে গ্যালারিতে কোনো দর্শক ছিল না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.