লিবিয়ার হঠাৎ বন্যা–ঘূর্ণিঝড়ে ১১ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের খাওয়ার পানি নেই। বন্যায় জমে থাকা পানির নিচে স্থলমাইনের ফাঁদ রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
লিবিয়ার উপকূলবর্তী দারনা শহর বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় মানুষেরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁদের খাওয়ার পানি নেই। যেখান থেকে খাওয়ার পানি আসে, তার উৎসমুখে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। তাই খাওয়ার পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে।
এখন দূর থেকে খাওয়ার পানি আনা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই দারনার বাসিন্দাদের। কিন্তু দূরে যেতে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। কারণ, বন্যার পানির নিচে কোথায় স্থলমাইন পোঁতা আছে, তাঁরা জানেন না। বস্তুত, কোনো কোনো এলাকায় বিপুল পরিমাণ স্থলমাইন আছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
দারনার স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই শহরসহ বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। গত শনিবার পর্যন্ত ১৫০ জনের পেটের অসুখ হয়েছে। কিছু মানুষকে হাসপাতালেও পাঠাতে হয়েছে। বিষাক্ত পানি খেয়ে আরও মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থলমাইন বিস্ফোরণ এখনো হয়নি। কিন্তু স্থলমাইনের ভয়ে মানুষ পানি আনতে দূরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দারনায় ৮৯১টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ৩৯৮টি বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ঠিক কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক অফিস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কোনো কোনো সংস্থা এর চেয়েও বেশি মৃত্যুর কথা বলছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, কিছু জায়গায় এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাই সেখানে উদ্ধারকাজই শুরু করা যায়নি।
২০১১ সাল থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া। গদ্দাফির মৃত্যুর পর দেশে স্থিতিশীলতা আসেনি। কার্যত গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। এরই মধ্যে এই বন্যায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের।