
উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে মুহিকার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য সারা বিশ্বে তিনি ‘সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির হাজারো মানুষ তাঁদের প্রিয় ‘পেপে’কে শেষবিদায় জানাতে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। হোসে মুহিকার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে উরুগুয়ে গিয়েছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
দীর্ঘদিন ক্যানসারে ভোগার পর গত মঙ্গলবার মারা যান হোসে মুহিকা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। মৃত্যুর পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য জনপ্রিয় এই নেতার মরদেহ দুই দিন রাখা হয়েছিল। এই সময়ে প্রায় এক লাখ মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
‘তিনি (হোসে মুহিকা) আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন—অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকতে, বাহ্যিক আড়ম্বরের জন্য না বাঁচতে।’…পাওলা মার্তিনেজ, শ্রদ্ধা জানাতে আসা এক ব্যক্তি
হোসে মুহিকার কফিনে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের দীর্ঘলাইন পড়ে গিয়েছিল। পার্লামেন্ট ভবনে সৃষ্টি হয়েছিল আবেগঘন পরিবেশের। শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা ব্যক্তিদের কারও হাতে ছিল ফুল, কেউ কেউ কাঁধে তাঁর দলের পতাকা জড়িয়ে এসেছিলেন।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা পাওলা মার্তিনেজ এএফপিকে বলেন, ‘তিনি (হোসে মুহিকা) আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন—অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকতে, বাহ্যিক আড়ম্বরের জন্য না বাঁচতে।’
সাবেক এই গেরিলাযোদ্ধা ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত উরুগুয়ের শাসনক্ষমতায় ছিলেন। উরুগুয়েতে স্বৈরশাসনের সময় ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত কারাবন্দী ছিলেন হোসে মুহিকা। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে বামপন্থীদের ক্ষমতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
এক বছর আগে হোসে মুহিকার খাদ্যনালিতে ক্যানসার ধরা পড়েছিল, পরে ক্যানসার তাঁর যকৃতে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাদাসিধে জীবনযাপন, ভোগবাদবিরোধী অবস্থান এবং সামাজিক সংস্কারমূলক কাজগুলো হোসে মুহিকাকে লাতিন আমেরিকার গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী এক পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছিল।