লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাছান জসিমকে গুলি করে হত্যার দায়ে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনা ফারহিন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হিজবুর রহমান পলাতক আছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আলী হোসেন বাচ্চু (৪৩), মোস্তফা (৪৩), খোকন (৪৮), আবুল হোসেন (৬৮), মোবারক উল্যা (৬১), কবির হোসেন রিপন (২৬), জাফর আহম্মদ (৬১) ও হিজবুর রহমান (৪০)।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মেহেদী হাছান জসিম চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে ওই আসামিরা জানালার গ্রিল ভেঙে ঘরে ঢুকে মেহেদীর বুকে গুলি করেন। মেহেদীকে বাঁচানোর জন্য পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এলে আসামিরা গুলি করার হুমকি দিয়ে তাঁদের পিটিয়ে আহত করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মেহেদীকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পরদিন নিহত মেহেদীর বাবা মফিজ উল্যা বাদী হয়ে সদর থানায় মোবারক উল্যাসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর সদর থানা-পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবু নাছের ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, হত্যা মামলার ১২ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে। তাঁদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন। অন্য আট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী মফিজ উল্যা বলেন, ‘১০ বছর পর আজ আমাদের খুশির দিন। আমার ছেলেকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের আটজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। এই রায়ে আমরা খুশি। তবে এই রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে, এটাই শুধু আমাদের চাওয়া।’