প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিগগির রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত ভাসানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।
সোমবার সকালে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। খবর বাসসের।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের ক্যাম্পে ঘনবসতিপূর্ণ জীবনযাপন করছে। রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা সংবলিত ভাসানচরে স্থানান্তর করা গেলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। সেখানে এক লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি বলেন, ভাসানচরে উন্নতমানের জীবনযাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জঙ্গিবাদেও জড়িত। কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয়েছে।
বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এমডিজির লক্ষ্য অর্জন ও এসডিজি অর্জনে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গুয়েন লুইস আরও বলেন, বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও কভিড-১৯-পরবর্তী পরিস্থিতিতে নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ কিছু চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হবে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ অতীতেও বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে জলবায়ু সহিষুষ্ণ করতে এর আগে অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ধনী দেশগুলো শুধু প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছে; কিন্তু তারা সেগুলো পালন করছে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক খাতে কোনো শিশুশ্রম নেই।