রোজিনা ইসলামের মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশে বিএফইউজে, ডিইউজেসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্বেগ

0
177
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম

আজ মঙ্গলবার আর্টিকেল নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল এক বিবৃতিতে বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম করোনা মহামারির সময় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো রোজিনা ইসলামকে নিগ্রহ ও নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলার কারণে তাঁকে এখনো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

বিবৃতিতে ফারুখ ফয়সল বলেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নারাজি দেওয়া রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। আইনের অপব্যবহার করে ধারাবাহিক এ আইনি হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আর্টিকেল নাইনটিন রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলাটি তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

রোজিনা ইসলাম ২০২১ সালের ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আক্রমণের শিকার হন। তাঁকে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে তাঁকে শত বছরের পুরোনো ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে’ গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলা তদন্ত করে গত বছরের জুলাইয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। রোজিনা ইসলামকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে তাতে বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি।

এ মামলার বাদী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী গতকাল সোমবার আদালতে হাজির হয়ে ওই প্রতিবেদনে নারাজি দেন। আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আজ এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মধুসূদন মণ্ডল ও মহাসচিব দীপ আজাদ এবং ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন। তাঁদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবাদ সংগ্রহের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রোজিনা ইসলাম যেভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের হেনস্তার শিকার হয়েছেন, তা ন্যক্কারজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তখন সরকারের বিভিন্ন মহলে ঘাপটি মেরে থাকা একটি অসাধু চক্র নিজেদের দুর্নীতি-অনিয়ম-অপরাধ ঢাকতে সাংবাদিকদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ওই চক্রের কর্মকাণ্ড সরকারের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে নানাভাবে হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলার জালে আবদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান আজ এক বিবৃতিতে বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার প্রায় সাত মাস পর মামলার বাদী নারাজি দিয়েছেন। এটি স্বাধীন ও মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তরায়। তাঁরা অবিলম্বে এ মামলা থেকে রোজিনা ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলাম ‘সেরা অদম্য সাহসী’ হিসেবে ২০২১ সালে ‘ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। এ ছাড়া তিনি গত বছরের ৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২২ সালের ‘অ্যান্টি-করাপশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’ পান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.