শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে মুঠোফোনে তিনি পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাত নয়টার দিকে তিনি পদত্যাগ করেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘পদত্যাগ করেছি এটা সত্য। শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যাপারে আমার কিছুই করার ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘পদত্যাগে বাধ্য করা হলো। তা ছাড়া বলল যে কাল থেকে তালা লাগিয়ে দেবে, নইলে পদোন্নতি দিতে হবে। তালা লাগিয়ে দিলে থাকা না–থাকাটা তো সমানই।’
এর আগে বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত চলতি দায়িত্বে থাকা উপাচার্যের পদত্যাগ, নিয়মিত উপাচার্য নিয়োগ ও পদোন্নতির দাবিতে উপাচার্য কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন অন্তত ৮০ জন শিক্ষক। তখন পদোন্নতি ও নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া না হলে আগামীকাল থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিক্ষকেরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা জানান, গত বছরের ৩ জুলাই থেকে চলতি দায়িত্বের উপাচার্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চলছে। দীর্ঘদিন পার হলেও নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় তাঁরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না। চলতি দায়িত্বের উপাচার্যের নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় শিক্ষকদের পদোন্নতি হচ্ছে না।
শিক্ষকেরা বলছেন, সাধারণত প্রতিবছর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষকদের পদোন্নতি ও আপগ্রেড করে রুয়েট কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত উপাচার্য না থাকায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেষ বিজ্ঞপ্তির পর আর কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। সব শর্ত পূরণ করেও ১৫ মাসে অন্তত ৮০ জন শিক্ষক তাঁদের ন্যায্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রবিউল আউয়াল রোববার দুপুরে বলেছিলেন, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম শেখের মেয়াদকাল শেষে গত বছরের আগস্টে উপাচার্যের দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনে অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে নিয়োগ দেয় সরকার। অথচ প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তাঁকে নিয়োগ দিতে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
আন্দোলন চলাকালে অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। উপসচিব জানিয়েছেন, চলতি দায়িত্বের উপাচার্যের পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। ফলে নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব নয়।
এর আগে গত ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে উপাচার্য হিসেবে চলতি দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়।