ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তির মাধ্যমে দু’দেশের বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে। ডলারের ওপর চাপ কিছুটা কমবে। আমদানি-রপ্তানি হবে সহজ। বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতীয় বিনিয়োগও সহজ হবে।
গতকাল মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দু’দেশের নীতিনির্ধারক এবং কর্মকর্তারা। রুপিতে লেনদেন উপলক্ষে ইস্টার্ন ব্যাংকের (ইবিএল) ইন্ডিয়া বিজনেস ডেস্ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বিশেষ অতিথি ছিলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রুপিতে লেনদেন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ সিদ্ধান্তকে বিশ্বস্ত দুই প্রতিবেশীর বাণিজ্য উন্নয়নে ‘মাইলস্টোন’। এতে মানুষে মানুষে আন্তঃসংযোগ বাড়াবে। বিশেষ করে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যাতায়াত সহজ করবে। তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার সময় ভারত-বাংলাদেশ আন্তঃসংযোগ ১৯৬৫ সালের আগের অবস্থায় নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে নির্দেশনা দেন। বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দু’দেশের সম্পর্ক ১৯৬৫ সালের আগের অবস্থানকেও ছাড়িয়ে গেছে। ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেপাল থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানিতে সঞ্চালন লাইনে বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে দু’দেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কার্যকর আন্তঃসংযোগ তৈরি হয়েছে। বাণিজ্যে গতি বেড়েছে। এশিয়ার মধ্যে ভারত এখন বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার। লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তির সুযোগকে দু’দেশের বাণিজ্যে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সহজ এবং সাশ্রয়ী হবে।
ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, গত এক বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দর প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে সব দেশ থেকেই আমদানি কঠিন হয়ে পড়ে। বাণিজ্যিক লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তির সুযোগ ভারত থেকে আমদানি অনেক বাড়বে।
ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ইবিএলের ইন্ডিয়া বিজনেস ডেস্কের সেবা দু’দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ভারত এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ইবিএলের ইন্ডিয়া বিজনেস ডেস্ক থেকে লেনদেনে ওয়ানস্টপ ব্যাংকিং সুবিধা পাবেন।