রিয়ালে ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখছেন না আনচেলত্তি

0
93
নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখেন না আনচেলত্তি

ম্যানচেস্টার সিটির আক্রমণের তোড়ে রিয়াল মাদ্রিদ যখন অসহায়, তখন ডাগআউটে দাঁড়ানো কার্লো আনচেলত্তির চুইংগাম চিবানোর গতি যেন একটু বেশিই মনে হচ্ছিল। হয়তো নতুন কিছু ভাবছিলেন। কিন্তু চুইংগাম চিবিয়ে আর নতুন কোনো কৌশল বের করতে পারলেন কোথায়! চোখের সামনে বিধ্বস্ত হতে দেখলেন নিজের ‘সাজানো বাগান’।

চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দুই লেগ মিলিয়ে হারের ব্যবধান ৫-১—রিয়ালের কোচ আনচেলত্তি স্বীকার করলেন, এমন নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মতো হারে বিশ্লেষণের কিছু নেই। আর নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেছেন আনচেলত্তি।

টনি ক্রুসের দূরপাল্লার শট কিংবা ডেভিড আলাবা ফ্রিকিক থেকে গোল করে ফেললে, হয়তো পরিস্থিতি পাল্টাতেও পারত। কিন্তু সেসব যখন হয়নি, তখন ম্যাচ শেষে ‘দুর্দান্ত’ সিটিকেই সব কৃতিত্ব দিয়েছেন রিয়ালের এই ইতালীয় কোচ, ‘তারা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে, তাই জিতেছে। জয়টা তাদের প্রাপ্য।’

কিছুই পরিকল্পনামাফিক হয়নি আনচেলত্তির
কিছুই পরিকল্পনামাফিক হয়নি আনচেলত্তির

কিন্তু আগামী মৌসুমে আনচেলত্তির হাতেই কি থাকবে রিয়াল? ক্লাবের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ অবশ্য সেটিই চান। ২০২৪ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে আনচেলত্তির সঙ্গে। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠতে না পারার অর্থ হচ্ছে, এ মৌসুমে কেবল কোপা দেল রে শিরোপাই উপহার দিতে পারলেন আনচেলত্তি। লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ— আসল দুটি টুর্নামেন্টেই যখন ব্যর্থতা, তখন আনচেলত্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ জাগাই স্বাভাবিক।

তবে আনচেলত্তি নিজে কিন্তু এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না। ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘কোনো শঙ্কা নেই। সভাপতির সঙ্গে ১৫ দিন আগেই কথা হয়েছে। কেউ এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেনি।’ সভাপতির সঙ্গে কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে তা অবশ্য খোলাসা করেননি রিয়াল কোচ, ‘সভাপতি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যা বলেছেন তা এখানে বলব না।’

এমন হারের বিশ্লেষণ করতে যাওয়াই বৃথা, মনে করেন আনচেলত্তি
এমন হারের বিশ্লেষণ করতে যাওয়াই বৃথা, মনে করেন আনচেলত্তি

গতবারও চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে রিয়াল-সিটি মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার রিয়াল ফাইনালে উঠলেও কালকের রাতটা আনচেলত্তির জন্য ছিল যেমন রেকর্ড গড়ার, তেমনি হৃদয় ভাঙার। জ্যাক গ্রিলিশ, কেভিন ডি ব্রুইনা, বেনার্দো সিলভারা চেপে ধরেছিলেন রিয়ালের রক্ষণকে। আনচেলত্তির ভাষায় সেই চাপটাই আর সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি তাঁর দল, ‘শুরু থেকেই তারা আমাদের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করেছিল। এই চাপ সৃষ্টি করাটা কাজে এসেছে। আক্রমণের তোড়ে আমরা বলের দখলই নিতে পারছিলাম না। আক্রমণেও উঠতে পারছিলাম না। খুব দ্রুতই তারা ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। এই জায়গা থেকে আসলে ফেরাটা বেশ কঠিনই। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু সফল হইনি।’

এমন হারে বিশ্লেষণের কিছুই দেখছেন না আনচেলত্তি, ‘এই হারের বিশ্লেষণ করার কিছু নেই। বিশ্লেষণ করার কোনো মানেও হয় না। এই হার হৃদয় ভেঙে দেওয়ার। কিন্তু কিছু করার নেই। ফুটবলে এমন দিন মাঝেমধ্যে আসে। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে আমরা খুব কঠিন একটা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলেছি। তারা ভালো খেলে আমাদের হারিয়েছে। এই হার থেকে যে শিক্ষাটা আমরা পাচ্ছি, সেটি পরের মৌসুমে অবশ্যই কাজে আসবে।’

মন ভেঙে যাওয়া এই রাতেই আনচেলত্তি দারুণ একটা রেকর্ডও গড়েছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বোচ্চ ১৯১ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ানোর রেকর্ড গড়লেন তিনি। পেছনে ফেললেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনকে। কিন্তু রেকর্ড গড়ার দিনেই কোচিং ক্যারিয়ারে অন্যতম বড় হারের মুখোমুখি রিয়াল মাদ্রিদ কোচ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.