দাম্পত্যে টানাপোড়েনে শেষ পর্যন্ত ভেঙে যাচ্ছে চিত্রনায়িকা পরীমনি ও নায়ক শরীফুল রাজের সংসার। ১৮ সেপ্টেম্বর পরীমনি রাজের উদ্দেশে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। এর দুদিন পর ২০ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে তাঁদের বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যমে। পারিবারিক একটি সূত্রও এই নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য পরীকে না পাওয়া গেলেও অল্পক্ষণের জন্য পাওয়া গেছে রাজকে।
রাজের দেশের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঠিকানায় পাঠানো ডিভোর্স লেটারে পরীর পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে—পরী চারটি কারণে রাজকে ডিভোর্স দিতে চান—মনের অমিল হওয়া, বনিবনা না হওয়া, খোঁজখবর না নেওয়া ও মানসিক অশান্তি।
ডিভোর্সের ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বুধবার সন্ধ্যার পর কাজী আবু সাইদ বলেন, ‘১৬ সেপ্টেম্বর আমাদের সঙ্গে পরীর পক্ষের লোকজন যোগাযোগ করেন।
লেটারে উল্লিখিত সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর পরীমনির আইনজীবীর গুলশান অফিসে ডিভোর্স হয়েছে। সেখান আমার সহকারী আলী আশরাফ উপস্থিত ছিলেন। পরের দিন ১৮ সেপ্টেম্বর উত্তর বাড্ডার আলীর মোড়ের, সাতারকুল রোডের আমার অফিস থেকে ডিভোর্স লেটার রেজিস্ট্রি করা হয়। এরপর ওই দিনই দুপুর ১২টার দিকে রাজের গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছি।’
এই কাজী আরও বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী তিন মাস পরপর পাঠানো হবে এই চিঠি। যদি রাজ এই চিঠি গ্রহণ না করেন, তাহলে ৯০ দিন পর তাঁদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। আর যদি তিন মাসের মধ্যে তাঁদের আবার বনিবনা হয়, নিজেদের মধ্যে একটা সমাধান হয়, তাহলে আবারও তাঁরা সংসার করতে পারবেন।’
তিনি আরও জানালেন, ডিভোর্সের খবর রাজ জানতেন না। গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশের পর তাঁর নজরে আসে।
তিনি বলেন, ‘শুনেছি রাজ খবরটি জানতেন না। আজ বেলা ১১টার দিকে রাজের ভাইয়ের পরিচয়ে একজন আমার অফিসে এসেছিলেন। তিনি কাবিননামার কপি ও ডিভোর্সসংক্রান্ত কাগজ পত্র নিয়ে গেছেন।’
২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি প্রকাশ্যে আসে রাজ-পরীর সম্পর্কের খবর। গত বছরের ২২ জানুয়ারি দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ১০১ টাকার দেনমোহরে ঘরোয়া আয়োজনে তাঁদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। ২১ জানুয়ারি হয় তাঁদের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান।
রাজের সঙ্গে সংসারজীবনের ১০ মাসের মাথায় তাঁর কোলজুড়ে আসে সন্তান। এর এক দিন পর ছেলের ছবিসহ নাম প্রকাশ করেন নায়িকা। তিনি জানান, রাজের সঙ্গে মিল রেখে ছেলের নাম রেখেছেন ‘শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য’।
দেড় বছরের দাম্পত্য জীবনে নানা ঘটনা আলোচনায় এসেছে। কখনো বিদ্যা সিনহা মিম, কখনো সুনেরাহ বিনতে কামালসহ অন্য কাউকে ঘিরে রাজের প্রতি সন্দেহের তির ছুড়েছেন পরীমনি। এসব নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি।
সম্পর্কের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সবশেষ দুজনকে একসঙ্গে দেখা গেছে ৮ সেপ্টেম্বর মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে। সন্তানকে কোলে নিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম সারিতে রাজ-পরী কিছুক্ষণের জন্য পাশাপাশি বসেছিলেন।
ডিভোর্সের ব্যাপারে পরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর ফোন, ফেসবুক সবই বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান, ‘আমি কিছুক্ষণ আগে ঘুম থেকে উঠেছি। কিছু জানি না। আর কোনো ডিভোর্স লেটারও পাইনি। কোন ঠিকানায় পাঠিয়েছে, তা–ও তো জানি না।’ এরপর ফোন কেটে যায়। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও ধরেননি।