রাজা চার্লসের দাতব্য সংস্থায় অর্থায়ন নৌকার কান্ডারি সালমানপুত্র সায়ানের

0
4
সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান

বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তদন্তে নাম এসেছে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকেরও।

নানা বিতর্কের মাঝে এবার আলোচনায় এসেছেন সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমান। আলোচনার কারণ- রাজা চার্লসের প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য সংস্থার উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সংস্থায় আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন সায়ান। যা আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) পাউন্ড রেটে দাড়ায় প্রায় ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। শনিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের (সানডে টাইমস নামেও পরিচিত) প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের এ তথ্য জানায়।

প্রশ্ন হচ্ছে, এতো বিপুল পরিমাণ অর্থ রাজা চার্লসের দাতব্য সংস্থায় কীভাবে দিলেন সায়ান। শেখ রেহানার পরিবারকে যারা ব্রিটেনে সম্পত্তি দিয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম দাতা শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান রহমান।

মূলত, সম্পত্তি নিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্তের জেরে সায়ান রহমানের এসব অর্থ লেনদেন খুঁজে পায় দ্য টাইমস। অনেকটা কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়েছে।

সানডে টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, সায়ান রহমান একটি অফশোর ট্রাস্টে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিন এলাকায় ১২ লাখ পাউন্ড দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছিলেন। সেই বাড়িতে থাকতেন টিউলিপের মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা। এছাড়াও লন্ডনের গ্রসভেনর স্কয়ারে সায়ান রহমানের একাধিক সম্পত্তি রয়েছে যার মোট দাম ৪ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শেখ রেহানা লন্ডনে ১৩ লাখ ডলার মূল্যের সায়ানের বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকতেন। টিউলিপ সিদ্দিক মূলত ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য। তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেয়া। একজন দুর্নীতি সামাল দেয়া মিনিস্টার নিজেই দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।

এর আগে, ২০০৭ সালে ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’ নামের দাতব্য সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ রাজপুত্র তৃতীয় চার্লস।

ঠিক ১১ বছর পর, ২০১৮ সালে, বাংলাদেশে এই ট্রাস্টের কার্যক্রম শুরু করতে সাহায্যের হাত বাড়ান নৌকার কান্ডারি সালমানের পুত্র সায়ান। তিনি এই সংস্থার একটি উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।

২০১৮ সালে, লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে এক নৈশভোজে সবার সামনে সায়ান রহমানের প্রশংসা করেছিলেন চার্লস। বলেছিলেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি যে সায়ান রহমান যে সহায়তা দিচ্ছেন, তার জন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সালমান এফ রহমানের পাশাপাশি সায়ান এফ রহমান ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে আট কোটি ডলারের বেশি অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.