ইউটিউবে আমার দুটি চ্যানেল আছে। আগে–পরে একটা–দুটো করে গান ছাড়ার পরিকল্পনা আছে। আমি চিন্তা করছি, একেকটা চ্যানেলে মাসে ৩–৪টা করেও যদি গান ছাড়ি, ২ মাসে ১০টা গান মুক্তি পেয়ে যাবে।
এই গানগুলো সম্পর্কে যদি ধারণা দিতেন।
সব সময় যে ধরনের গান গেয়ে থাকি, এবারের গানগুলোও সে রকম। আমার ট্র্যাকের বাইরে যাইনি। একদম কাছাকাছি থাকছি। এই গানগুলো খুবই মেলোডিয়াস। বেঁচে থাকার মতো গান। গানগুলোর কথা লিখেছেন ও সুর করেছেন মিল্টন খন্দকার, লিটন শিকদার ও দেবু রায়। তাঁদের মধ্যে মিল্টন খন্দকারের সঙ্গে আমার ৩২ বছরের সম্পর্ক।
এই যে ৩২ বছরের সম্পর্ক, এটা গান তৈরি ক্ষেত্রে কতটা সহায়ক?
মিল্টন খন্দকারের সঙ্গে মূলত গান দিয়েই পরিচয়। সেই থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে, তিনি আস্থার একটা জায়গা, দারুণ একটা ভালো লাগার জায়গা। তাঁর জ্ঞান, গুণ, কথা বলা, মেশামেশি, আদর—সবই আমার ক্ষেত্রে সুখকর। দীর্ঘ সংগীতজীবনে অনেকের সঙ্গে কাজ করছি, কিন্তু এই জায়গায় আমার বোঝাবুঝি সবচেয়ে বেশি। এ কারণে গানও বেশ ভালো হয়।
তিন দশকের বেশি গানের অঙ্গনে আছেন।
আসলে আমাদের সবাইকেই স্বীকার করতে হবে—যুগের ও সময়ের পরিবর্তন সব সময় ছিল, এখনো আছে। আগামী দিনেও আসবে। এখন হয়তো ইউটিউব, ফেসবুক চলছে, সামনে অন্য কিছু ঠিকই চলে আসবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদের মানাতেই হবে। সেখানে এসেও যে আমরা কাজ করছি, আমাদের কাজ মানুষ পছন্দ করছে, এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। তবে আমি আশ্চর্য হই না এই ভেবে যে আগে তো লং প্লে ছিল; তারপর ক্যাসেট, সিডি, পেনড্রাইভ, মেমোরি কার্ড; এখন এসেছে ইউটিউব। চোখের সামনে অনেকগুলো পরিবর্তন দেখলাম, এসবে আমি মোটেও আশ্চর্য হই না। সময়ের সঙ্গে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন তো হবেই।
পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তো সমস্যা হয়নি?
একদমই না। আমি মনে করি, পরিবর্তনের ব্যাপারটা মানলেই হয়।
শিল্পীদের তো এখন আয়ের বড় মাধ্যম স্টেজ শো। আপনার কেমন চলছে?
আমি বলব, রোজার আগে অনেক স্টেজ শো করেছি, প্রচুর করেছি। ঈদের পরও অনেকগুলো স্টেজ শোর ব্যাপারে কথা হয়েছে। কিছু কনফার্ম করেছি। বাকিগুলোও হয়ে যাবে। করোনার পর থেকে আমি বলতে পারি, কাজ অনেক করছি। আর কোনো দিন রাজনীতিতে আসব না ঘোষণা দেওয়ার পর স্টেজ শো বেড়েছে। আমি শিল্পী তো সবার জন্য, কিন্তু রাজনীতির কারণে একটা পক্ষের ছিলাম। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তো পক্ষ–বিপক্ষ থাকে, যখন একটা পক্ষের ছিলাম, কেউ ‘এ’তে থাকলে ‘বি’ পছন্দ করে না, ‘বি’তে থাকলে ‘এ’ পছন্দ করে না। এ রকম পরিস্থিতি তো বাংলাদেশে দেখা যায়ই, তাই সেটার কিছু বাধা তো ছিলই। সেখান থেকে যখন ঘোষণা দিয়ে ফিরে এলাম, সবার কাছে আবার তাদের প্রিয় শিল্পী হয়ে উঠলাম। অবাধ সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, শিল্পীদের মধ্যে বহুল জনপ্রিয় বা মানুষের কাছে অসম্ভব পছন্দের কেউ কোনো একটা পক্ষের হয়ে কাজ করলে জনগণ মনে আঘাত পায়। সাধারণ মানুষ একজন শিল্পীকে তাঁর কর্ম দেখে পছন্দ করে। রাজনীতির কারণে তাঁর কর্মের ওপর তখন বিতর্কের সৃষ্টি হয়। মানুষ ভাবে, ‘এই লোকটাকে হৃদয়ে পুষে রাখি, অথচ এই লোকটা একটা পক্ষে চলে গেল!’ তখন একটু দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। জনগণ একটু কষ্ট পায়।