রাজধানীর অধিকাংশ মার্কেটই অগ্নি-ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিস

0
100
রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে বৃহস্পতিবার অগ্নিনিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা সদর জোন-১-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ।

রাজধানীর বেশিরভাগ মার্কেটই ফায়ার সার্ভিসের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা সদর জোন-১-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ এমন মন্তব্য করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে অগ্নিনিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে অগ্নিনিরাপত্তা পরিদর্শনে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বজলুর রশিদ বলেন, ‘ঢাকা শহরে অনেক মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ আছে। এর মধ্যে ঠাঁটারিবাজারের একটা মার্কেট আছে, রাজধানী সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, চকবাজারে মার্কেটসহ অনেক মার্কেট আছে। এই মার্কেটগুলো ফায়ার সার্ভিসের চাহিদা ফুলফিল করতে পারেনি। ঢাকার বেশিরভাগ মার্কেটই আমাদের চোখে ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা অনুরোধ করব, এই মার্কেটগুলো যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়।’

বজলুর রশিদ আরও বলেন, ‘গাউছিয়া মার্কেটে ছয়টা সিঁড়ি আছে। সিঁড়ির কার্নিশে দোকান রয়েছে। এই সিঁড়ির দোকানগুলো সরাতে হবে। ২০২০ সালের শেষের দিকে আমরা এখানে একটা মহড়া করেছিলাম। এই মার্কেটে ফায়ার এক্সটিংগুইশার আছে। ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছাড়া যা যা থাকা দরকার তা নেই। অন্যান্য ফায়ার নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার জন্য আমরা সুপারিশ আকারে দেব।’

এই মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগে এখানে মহড়া করেছি। মার্কেট আগের থেকে উন্নত, তবে ঝুঁকি এখনও শেষ হয়নি। কখনও এখানে আগুন লাগলে এখানে আগুন নেভাতে প্রতিবন্ধকতা আছে। এখানে পর্যাপ্ত পানির উৎস নেই। এই মার্কেটে আগুন নির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। আর কী কী করতে হবে এই মার্কেটে সেটা আমরা সুপারিশ আকারে দেব। এই মার্কেটে ফায়ার টিম আছে বলে জানিয়েছেন মালিক সমিতি, তবে তার অস্তিত্ব পাইনি।’

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গাউছিয়া মার্কেট মালিক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান বাবু বলেন, ‘দুই বছর আগে ফায়ার সার্ভিস যে নির্দেশনা দিয়েছে তা পরিপূর্ণ করেছি। আমাদের ফায়ার সার্টিফিকেট আছে। এছাড়া সব ভবনেই কিছু ত্রুটি থাকে, আমাদের এখানে আউটডোরসহ যে ত্রুটি আছে তা দুই একদিনের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করব।’

সিঁড়ির মধ্যে দোকান নিয়ে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘এসব দোকান বসাতে সমিতির কোনো দায় নেই। কর্তৃপক্ষ যারা দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন, তারা জানেন এ বিষয়ে। সমিতির সভাপতি হিসেবে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কাজ আমার না। এরপরও ফায়ার সার্ভিস এসব দোকান সরাতে বলছে, আমরা কমিটির সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

মার্কেট যখন নির্মাণ করা হয়েছে তখন থেকেই সিঁড়িতে দোকান রাখা হয়েছে বলে জানান দোকানিরা। সিঁড়ির দোকানগুলোর জন্য বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাড়া গুনতে হয়। অগ্রিম জামানত ৫ লাখ টাকা।

কথা হয় গাউছিয়া মার্কেটের তৃতীয় তলার সিঁড়িতে দেওয়া রোমিও-জুলিয়েট নামে একটি দোকানের মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে এখানে দোকান করছি। মাসে ২০ হাজার টাকা ভাড়া দেই৷ পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে এই দোকান ভাড়া নিয়েছি।’

মার্কেটের সিড়ি আঁটকে মালামাল রাখতে দেখা গেছে। আগুন লাগলে তো এই সিড়ি দিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হবে। এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় সিঁড়িতে এভাবে মালামাল রাখি না। ঈদের কারণে এখন এভাবে রাখা হচ্ছে।’

তবে এভাবে সিঁড়ি আটকে মালামাল রাখা ঝুঁকিপূর্ণ সেটা তিনি স্বীকার করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.