রাউজানে সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, গিয়াস কাদেরের পদ স্থগিত

0
11
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী (বাঁয়ে) ও গোলাম আকবর খন্দকার

রাউজানে দুই পক্ষের মধ্যে বিকেলে সংঘর্ষের পর রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক চিঠিতে কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। জানতে চাইলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন।

চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। এ ছাড়া আরেকটি চিঠিতে স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও।

২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির গোলাম আকবর খন্দকারকে আহ্বায়ক করে ৪৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এতে কাউকে যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হয়নি। সেই কমিটিতে সদস্য করা ৯ জনকে পরে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি আজ বিলুপ্ত হয়। কোন্দলের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি সাড়ে চার বছরেও।

রুহুল কবির রিজভীর সই করা অপর চিঠিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদ স্থগিত ঘোষণা করা হলো। এ ছাড়া দলের ভেতর সংঘাত, হানাহানি সৃষ্টি করে দলীয় শৃঙ্খলা চরমভাবে লঙ্ঘন করায় বিলুপ্ত উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব গাজী নিজাম উদ্দিন, বারইয়ার হাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দিদারুল ইসলাম মিয়াজী, যুবদল নেতা সিরাজুল ইসলাম ও কামাল উদ্দিনকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ বিকেলে চট্টগ্রাম–রাঙামাটি সড়কের রাউজানে সত্তারহাট এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে ছররা গুলিতে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বিকেলে বলেন, এক পক্ষ কবর জিয়ারত করতে যাচ্ছিল, আরেক পক্ষ শোভাযাত্রায় ছিল। সত্তারহাট এলাকায় গোলাম আকবর খন্দকার তাঁর অনুসারীদের গাড়িবহর নিয়ে যাওয়ার সময় দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুরুতে কিছুটা সময় যান চলাচল বন্ধ থাকলেও পরে স্বাভাবিক হয়।

উল্লেখ্য, রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.