
পবিত্র রমজান উপলক্ষে ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সুলভ মূল্যে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম বিক্রি করবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ১ থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত এই বিক্রয় কার্যক্রম চলবে।
এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, চামড়া ছাড়া (ড্রেসড) ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতি ডজন ১১৪ টাকা দরে বিক্রি করা হবে। খাসির মাংস ঢাকা শহরে বিক্রি না করলেও বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্রি হবে। তবে খাসির মাংসের দাম নির্ধারণ করতে পারেনি মন্ত্রণালয়। পরে খাসির মাংসের দাম জানানো হবে।
আসন্ন রমজান উপলক্ষে আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের গৃহীত কার্যক্রম এবং গত ছয় মাসে মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব খবর জানান। পরে এই মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের ২৫টি স্থানে ড্রেসড (চামড়া ছাড়া) ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পাস্তুরিত দুধ ও গরুর মাংস এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্রয়লার মুরগি, ডিম, পাস্তুরিত দুধ, গরুর মাংস ও খাসির মাংস সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।
প্রাণিজাত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবের সময় যেসব স্থানে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ বেশি ছিল, সেসব স্থানকে এই বিক্রয় কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা শহরের সেই ২৫টি স্থান হলো সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গণি রোড), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), ৬০ ফুট রোড (মিরপুর), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), বনশ্রী, হাজারীবাগ (সেকশন), আরামবাগ (মতিঝিল), মোহাম্মদপুর (বাবর রোড), কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), শাহাজাদপুর (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), কামরাঙ্গীরচর চর, খিলগাঁও (রেলক্রসিং দক্ষিণে), নাখালপাড়া (লুকাস মোড়), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), বছিলা (মোহাম্মদপুর), উত্তরা (হাউজ বিল্ডিং), রামপুরা বাজার, মিরপুর-১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) ও কাকরাইল।
২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় দক্ষিণ বারিধারা আবাসিক এলাকার (ডিআইটি প্রজেক্ট) সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল মডেল স্কুল প্রাঙ্গণে ঢাকার এই বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ঢাকা শহর ছাড়াও দেশব্যাপী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সমন্বয়ে রমজানে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রান্তিক খামারিদের সম্পৃক্ত করে বিপণন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। আর বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তবে সব জেলা ও উপজেলায় এই কার্যক্রম চলবে না, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চলবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই কার্যক্রমে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ), দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজন এবং প্রান্তিক খামারিরা সহযোগিতা করবেন।
এদিকে বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সারা দেশে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের (এলএসডি) কারণে দেশের খামারিরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু খুব দ্রুত এই রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং বর্তমানে এ রোগ খামারিদের বড় দুশ্চিন্তার কারণ। এই রোগে আক্রান্তের হার প্রায় ৩০ শতাংশ এবং আক্রান্ত গবাদিপশু ৫-১০ শতাংশ মারা যায়, যা খামারিদের জন্য খুব উদ্বেগের কারণ। আমদানি করা ভ্যাকসিনের দাম কোম্পানিভেদে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হলেও সরকার এলএসডি ভ্যাকসিন উৎপাদনসহ গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করতে ৫০ টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে।