রক্তক্ষয়ী দিন দেখল খান ইউনিস

0
28
গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দারা

নির্বিচার বোমা হামলার সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী একটি দিনের সাক্ষী হলো গাজার খান ইউনিসের বাসিন্দারা। শহরটির পূর্বাঞ্চলে উপর্যুপরি হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অঞ্চলটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিমান হামলা থেকে বাঁচতে যারা এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করছেন, ইসরায়েলি স্নাইপাররা তাদের গুলি করছে।

হামলায় অন্তত ১২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। মৃতের এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটিকে ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা আখ্যায়িত করে একটি মানবাধিকার সংগঠন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার

এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান থেকে লিফলেট ফেলে শহরটির পূর্বাঞ্চল থেকে সরে যেতে বলেছিল বাসিন্দাদের। এর পর নিরাপদ মানবিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত এই শহর থেকে এক দিনে দেড় লাখ মানুষকে চলে যেতে বাধ্য হয়। তার পরও খাবার ও পানি ছাড়া সেখানে আটকা পড়েন হাজার হাজার মানুষ। কেউ তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি, সরে যাওয়ার মতো সময়ও পায়নি তারা। বাধ্য হয়ে আশ্রয়ের খোঁজে তাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটতে হলেও গাজার সর্বত্রই বোমা হামলা চলছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি ক্যাম্পের দিকে সরে যেতে বলা হলেও সেখানে পা ফেলার মতো জায়গা অবশিষ্ট নেই।

খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ হামলার পর ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলের গণহত্যার অপরাধ অব্যাহতভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। যখনই একটি যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই ইসরায়েলি বাহিনী উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চালায়। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি এবং সব ধরনের রাজনৈতিক, আর্থিক ও সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ প্রধানের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হুমকিতে সোমবার এক দিনে খান ইউনিস থেকে প্রায় দেড় লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে। এলাকা ছাড়ার নির্দেশ ও অভিযানের মধ্যকার সংক্ষিপ্ত সময় নিয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এই ব্যবধান ছিল মাত্র এক ঘণ্টা।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর ঘিরে ওয়াশিংটনে বিক্ষোভের ঢেউ শুরু হয়েছে। নেতানিয়াহু কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়ার আগে অফিস ভবনে মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইহুদি ভয়েস ফর পিসের বিক্ষোভকারীরা। তাদের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ক্যাপিটল পুলিশ। গতকাল তিনি কংগ্রেসে ভাষণ দেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে ফ্লোরিডার পাম বিচে নিজের রিসোর্টে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামীকাল শুক্রবার দুই নেতার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সোমবার ওয়াশিংটনে পৌঁছার পরই নেতানিয়াহুর হোটেলের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা। পরে মঙ্গলবার বিকেলে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস সদস্যদের অফিসে কয়েকশ বিক্ষোভকারী ফ্ল্যাশমব-স্টাইলে বিক্ষোভ করেছেন। লাল টি-শার্ট পরা বিক্ষোভকারীরা বিল্ডিংয়ের রোটুন্ডা দখলে নিয়ে মেঝেতে বসে ‘গাজা বাঁচুক!’ স্লোগান দেন।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.