রংপুরকে হারিয়ে গ্লোবাল সুপার লিগে চ্যাম্পিয়ন গায়ানা

0
25
গায়ানা আমাজনের হয়ে ৬৭ রান করেন জনসন চার্লসগ্লোবাল সুপার লিগ (জিএসএল)

১৯৬ রান তাড়া করতে নেমে জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিল ৬৯। হাতে ২ উইকেট। মাহিদুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম এখান থেকে আর কীই–বা করতে পারতেন! যতটা সম্ভব পাল্টা লড়াই চালিয়েছেন তাঁরা। রংপুর রাইডার্স ম্যাচ হেরেছে আসলে নিজেদের ইনিংসে প্রথম ১০ ওভারেই!

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে আজ গ্লোবাল সুপার লিগের (জিএসএল) ফাইনালে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের মুখোমুখি হয়েছিল রংপুর। গায়ানার প্রায় দুই শ ছুঁই ছুঁই সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে ১০ ওভার শেষে তাদের স্কোর ৬৫/৩। ইব্রাহিম জাদরান, কাইল মেয়ার্স ও সৌম্য সরকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ৩ ব্যাটসম্যানকে হারানোর পাশাপাশি দ্রুত রানও তুলতে পারেনি রংপুর। শেষ ১০ ওভারে ১৩২ রান তোলার চাপটা তাই নিতে পারেনি নুরুল হাসানের দল।

২০তম ওভারের শেষ বলে কামরুল আউট হওয়ায় ১৯.৫ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয় রংপুর। ৩২ রানের জয়ে গ্লোবাল সুপার লিগে নিজেদের প্রথম শিরোপা জিতল আমাজন ওয়ারিয়র্স।

গত বছর এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের প্রথম আসরে শিরোপা জিতেছিল রংপুর। এবারও সুযোগ ছিল। কিন্তু টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে ভালো হয়নি বোলিং। এরপর ব্যাটিংয়েও দ্রুত উইকেট হারানোয় চাপে পড়ে দ্রুত রান তুলতে না পারার খেসারত দিতে হলো নুরুলের দলকে।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ১০ ওভারেই বড় সংগ্রহের ভিত গড়েছে গায়ানা। রংপুরের পেসার খালেদ আহমেদ চতুর্থ ওভারে গায়ানা ওপেনার এভিন লুইসকে (৫) ফিরিয়ে দিলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জনসন চার্লস ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ দারুণ ব্যাট করেন। তাঁদের জুটিতে ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮৮ তুলেছে গায়ানা।

১ ছক্কা ও ১১ চারে ৪৮ বলে ৬৭ করা জনসন ১৫তম ওভারের শেষ বলটি খেলে রিটায়ার্ড আউট হওয়ার পর গায়ানার স্কোর ১৪২/২। শেরফান রাদারফোর্ডের ১৫ বলে ১৯* এবং রোমারিও শেফার্ডের ৯ বলে অপরাজিত ২৮ রানের ইনিংসে শেষ ৫ ওভারে ৫৪ রান তুলতে পেরেছে গায়ানা। রংপুরের স্পিনার তাব্রেইজ শামসি ১৬তম ওভারে গুরবাজকে ফেরান। ৪ ছক্কা ও ৬ চারে ৩৮ বলে ৬৬ রান করেন গুরবাজ।

মোট সাত বোলার ব্যবহার করেও গায়ানার রানের চাকা আটকাতে পারেননি রংপুর অধিনায়ক নুরুল। আজমতউল্লাহ ওমরজাই, খালেদ আহমেদ ও সৌম্য ওভারে গড়ে ১০–এর বেশি রান দিয়েছেন। ১টি করে উইকেট খালেদ ও শামসির।

তাড়া করতে নেমে রংপুর পাওয়ারপ্লের ৬ ওভার শেষে রংপুরের স্কোর ৩২/৩। দ্বিতীয় ওভারে রানআউট হন রংপুর ওপেনার ইব্রাহিম (৫)। দুই ওভার পর ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার সৌম্যও। ১৪ বলে ১৩ রান করেন তিনি। মেয়ার্সও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫ রান করে ফেরেন সৌম্য আউট হওয়ার পাঁচ বল পরই।

ম্যাচে টিকে থাকতে চতুর্থ উইকেটে প্রয়োজনীয় জুটিটি পেয়েছে রংপুর। ইফতিখার আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে ৪৪ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন সাইফ হাসান। ২৬ বলে ৪১ রান করা সাইফ ১৩তম ওভারে রান আউট হওয়ার পর মূলত ম্যাচ থেকে ধীরে ধীরে ছিটকে পড়ে রংপুর। কারণ, ১৪ থেকে ১৭তম ওভারের মধ্যে মাত্র ২৩ রান তোলার পথে ৪ উইকেট হারায় দলটি। ২৯ বলে ৪৬ রানে আউট হন ইফতিখার। ১৭ বলে ৩০ করা মাহিদুল আউট হন ২০তম ওভারের প্রথম বলে। শেষ ওভারে ম্যাচ ৪০ রানের সমীকরণে নেমে আসায় ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছে রংপুর।

গায়ানার হয়ে ৩৭ রানে ৩ উইকেট ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের। ২টি করে উইকেট ইমরান তাহির ও গুঁড়াকেশ মোতির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৯৬/৪ (জনসন ৬৭, গুরবাজ ৬৬, রোমারিও ২৮*, রাদারফোর্ড ১৯* ; ইফতিখার ১/১২, শামসি ১/২৮, খালেদ ১/৪৪, মেয়ার্স ০/২৩, কামরুল ০/৩৫)

রংপুর রাইডার্স: ১৯.৫ ওভারে ১৬৪ (ইফতিখার ৪৬, সাইফ ৪১, মাহিদুল ৩০, সৌম্য ১৩, কামরুল ৭; প্রিটোরিয়াস ৩/৩৭, তাহির ২/৩৯, মোতি ২/৩২)।

ফল: গায়ানা আমাজন ৩২ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: রহমানউল্লাহ গুরবাজ।

টুর্নামেন্টসেরা: ইমরান তাহির।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.