যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষক স্থায়ী, আরেকজন সাময়িক বরখাস্ত

0
101
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির ঘটনায় দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে স্থায়ী বরখাস্ত এবং প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৪তম সিন্ডিকেট সভা শেষে রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ন কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সম্প্রতি মানবসম্পদ ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগে যৌন হয়রানির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গতকাল ১৩ মার্চ এই দুই শিক্ষককে অনির্দিষ্টকালের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের এই আদেশে নাখোশ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের গতি বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসসিক ভবনসহ সকল বিভাগে এবং ব্যাংকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে আন্দোলনকারিরা এই দুই শিক্ষককে স্থায়ী বহিস্কার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল আটকে দেয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি (উপাচার্য) প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।

এই অবস্থায় মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ১৪ মার্চ সকালে ৮৪তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে যৌন হয়রানির ঘটনায় এই সিদ্ধাস্ত নেওয়া হয়। এ সময় আন্দোলনকারিরা ঘোষিত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেয়।

এ সময় ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, ভিসি প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ন কবীরসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহ’র বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে গত ৪ মার্চ আন্দোলন শুরু করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে ওই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে ৫ মার্চ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এই তদন্ত কমিটি গঠনের একদিন পর ৬ মার্চ আন্দোলনকারিরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেটসহ ভাঙচুর করে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুর্নগঠন করে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকেও তদন্তের আওতায় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.