যৌনতার বিনিময়ে মাছ: মালাবিতে রুখে দাঁড়াচ্ছেন নারীরা

0
159
মালাবি হ্রদের এই তীরেই লুউচি সম্প্রদায়ের ফিশিং ক্যাম্প। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দেশ মালাবির ক্যাথেরিন (ছদ্মনাম) তিন সন্তানের মা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে টানা তিন দিন বিধবা এই নারী মাছ কিনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছিলেন। স্থানীয়ভাবে এই মাছ উসিপা নামে পরিচিত। মাছ কিনতে তিনি মালাবি হ্রদের তীরে লুউচি সম্প্রদায়ের একটি ফিশিং ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবারই জেলেরা তাঁর কাছে মাছের বিনিময়ে অর্থ নয়, যৌনতা চেয়েছিলেন।

৪৪ বছর বয়সী ক্যাথেরিন বলেন, ‘আমি সব সময় এই চাওয়া প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। কিন্তু তখনই আমার ও সন্তানদের জীবন খুব কঠিন হয়ে উঠেছিল। মাছ বেচার জন্য আমিও মরিয়া হয়েছিলাম, কারণ এটাই আমার আয়ের একমাত্র উৎস। এর পরদিন আমি আবারও হ্রদের তীরে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রথম যে জেলে উসিপার বিনিময়ে যৌনতা দাবি করেছিলেন, সেদিন তাঁর প্রস্তাব আমাকে মেনে নিতে হয়েছিল।’

মালাবি সরকারের ২০২১ সালের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটিতে মৎস্য খাতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করেন। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অন্তত ৪ শতাংশ আসে এ খাত থেকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অতিরিক্ত মাছ ধরা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাছ ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে।

নর্দার্ন মালাবির মজুজু ইউনিভার্সিটির ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াটিক সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক ফানুয়েল কাপুতে বলেন, মাছ কমে যাওয়ার কারণে লেকশোর জেলায় বিনিময় প্রথায় যৌনতা মূল চালক হয়ে উঠেছে। কারণ, এখানে মাছ ধরা মূল পেশা আর আয়েরও উল্লেখযোগ্য উৎস। এখানকার বাজারে অধিকাংশ ক্রেতাই দরিদ্র নারী। তিনি আরও বলেন, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের দিকে যখন উসিপা কম ধরা পড়ে আর প্রতিযোগিতা বেশি থাকে, তখন এ ধরনের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।

২০১২ সাল থেকে জেলের কাজ করেন ফ্র্যাঙ্ক নখানি। তিনি দাবি করেন, তিনি কখনোই বিনিময়মূলক যৌনতায় জড়িত ছিলেন না। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, তিনি লুউচির অনেক জেলেকে চেনেন, যাঁরা এ ধরনের কাজে জড়িত। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু নারীও জেলেদের কাছে এ প্রস্তাব দেন। আবার কারও কারও কাছে কোনো অর্থ থাকে না। তখন তাঁরা যৌনতার বিনিময়ে মাছ কেনার প্রস্তাব করেন।

মাছ কমে যাওয়ার কারণে লেকশোর জেলায় বিনিময় প্রথায় যৌনতা মূল চালক হয়ে উঠেছে। কারণ, এখানে মাছ ধরা মূল পেশা আর আয়েরও উল্লেখযোগ্য উৎস। এখানকার বাজারে অধিকাংশ ক্রেতাই দরিদ্র নারী।ফানুয়েল কাপুতে, নর্দার্ন মালাবির মজুজু ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক

এসব ঘটনায় অনেকেই কোনো অভিযোগ করেন না। আবার এগুলো গোপনে হয়ে থাকে বলে বিনিময়মূলক যৌনতায় ঠিক কতসংখ্যক জেলে ও মাছ বিক্রেতা জড়িত, তার সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা অনেক কঠিন।

দেশটির রুমফি জেলার মৎস্য বিভাগের মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ওথানিয়েল দুয়ে বলেছেন, তবে মাছের বিনিময়ে যৌনতার এই অমানবিক পরিস্থিতি অংশগ্রহণকারীদের এইচআইভি/এইডসের ঝুঁকিতে ফেলছে। তিনি বলেন, অনেক জেলে মাছ ধরার জন্য এক শিবির থেকে অন্য শিবিরে চলে যান। তাঁদের শরীরে যদি ভাইরাস থাকে, তাহলে তা তাঁরা পুরো সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

যৌনতার বিনিময়ে মাছ

শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল ক্যাথেরিনের। কিন্তু জীবন তাঁর ভিন্ন পথে মোড় নিয়েছে। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। তাঁর পেটের ভেতর বড় হতে থাকে প্রথম সন্তান। সে সময় সেকেন্ডারি স্কুলের পড়াশোনা তাঁকে ছেড়ে দিতে হয়। এর দুই বছর পর থেকে তিনি মাছ বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন।

মাছের বিনিময়ে যৌনতার এই অমানবিক পরিস্থিতি অংশগ্রহণকারীদের এইচআইভি/এইডসের ঝুঁকিতে ফেলছে। অনেক জেলে মাছ ধরার জন্য এক শিবির থেকে অন্য শিবিরে চলে যান। তাঁদের শরীরে যদি ভাইরাস থাকে, তাহলে তা তাঁরা পুরো সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে দিতে পারেন।ওথানিয়েল দুয়ে, রুমফি জেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা

ক্যাথেরিনের স্বামী ছিলেন একজন ক্লিনিক্যাল অফিসার। ২০১৭ সালে তিনি ম্যালেরিয়ায় মারা যান। সে সময় ক্যাথেরিন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হলেও আয়ের তেমন কোনো উৎস ছিল না। তিনি অসহায় হয়ে পড়েন।

ক্যাথেরিন বলেন, ‘যখন আমি জেলেদের কাছ থেকে মাছ কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তখন আমার স্বামী আমাদের যত্ন নিতেন। তাঁর মৃত্যুর পর আমি মাছ বিক্রি বন্ধ করতে পারিনি, কারণ এটিই ছিল আমার অর্থ আয়ের একমাত্র উপায়।’

২০১৮ সালে ক্যাথেরিন জেলেদের কাছ থেকে সহজে মাছ পেতে এবং কখনো কম দামে মাছ কেনার জন্য কয়েক জেলের সঙ্গে বিনিময়মূলক যৌনতা শুরু করেন। গত বছরের শেষের দিকে লুউচির কেট মওয়াফুলিরওয়া নামের এক নারীর সুবাদে টিটুকুলান নামে একটি নারী সমবায় সমিতির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এ সময় থেকে ক্যাথেরিনের বিনিময়মূলক যৌনতা বন্ধ হয়ে যায়। চিচেওয়া ভাষায় টিটুকুলান শব্দের অর্থ ‘একে অপরকে সহযোগিতা করো’।

৫৮ বছর বয়সী মওয়াফুলিরওয়া ৩০ সদস্যের একটি সমবায় সমিতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ সমিতি গত বছর চালু হয়েছে। ক্যাথেরিনের মতো তিনিও পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তবে তাঁর বৃদ্ধ স্বামী ও সাত সন্তান আছে।

মওয়াফুলিরওয়া বলেন, আশির দশকে তিনি মাছ বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। তখন মাছের ব্যবসার জন্য যৌনতা বর্তমান সময়ের মতো এত প্রচলিত ছিল না। তিনি আরও বলেন, অস্বীকৃতি সত্ত্বেও তাঁর এই বয়সে মাঝেমধ্যে মাছের বিনিময়ে যৌনসুবিধা পেতে তরুণ জেলেদের প্রস্তাবের সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। এ ধরনের প্রস্তাব ‘খুবই বিব্রতকর ও অত্যন্ত অপমানজনক’।

বিশাল পরিবারের সদস্য

এ সমবায় সমিতি ইউএসএআইডির অর্থায়নে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গ্রামীণ এলাকায় কাজ করা একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ফাইন্ড ইয়োর ফিটসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে এটি বাস্তবায়িত হয়েছিল।

টিটুকুলানের লক্ষ্য নারীদের ক্ষুদ্র ব্যবসা চালানো ও তাঁদের আয়ের উৎসকে বৈচিত্র্যময় করার মতো ক্ষমতায়ন করা। মওয়াফুলিরওয়া বলেন, এ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি উপায় হলো নারীদের কেবল মাছের ওপর নির্ভর না করার জন্য উৎসাহিত করা।

মালাবি সরকারের ২০২১ সালের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটিতে মৎস্য খাতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করেন। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অন্তত ৪ শতাংশ আসে এ খাত থেকে।

সমিতির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন। কেউ কেউ শাকসবজি ও ফল বিক্রি করেন এবং অন্যরা ভুট্টা, চাল, সয়াবিন, মুরগি ও আলু বিক্রি করেন। আয় তাঁরা ভাগ করে নেন। এ অর্থ সঞ্চিত রাখার জন্য তাঁরা গ্রামীণ ব্যাংকও প্রতিষ্ঠা করেন। এ ব্যাংক মওয়াফুলিরওয়া পরিচালনা করেন।

সমিতির সদস্যরা আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং সঞ্চয় নিয়ে আলোচনার জন্য মাসে দুবার বৈঠক করেন। আর সদস্যরা পালা করে সৈকতে মাছ কিনতে যান।

মওয়াফুলিরওয়া বলেন, এককভাবে মাছ কেনার পরিবর্তে নারীরা এখন চার থেকে পাঁচজনের একটি দল হয়ে যান। এতে তাঁদের দর-কষাকষির ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং যৌনতার প্রস্তাব দিয়ে অবৈধ সুবিধা নেওয়া জেলেদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যায়। তিনি আশা করেন, গ্রামের আরও নারী জীবনের প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবেন। মাছ বিক্রির চেয়েও ক্যাথেরিন এখন ফল ও সয়াবিন বিক্রি করে বেশি আয় করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজেকে একটি বিশাল পরিবারের অংশ মনে করি। আমরা একে অপরকে সমর্থন করি। গ্রুপটি অবশ্যই ধীরে ধীরে জীবনে পরিবর্তন আনছে।’

এ পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় পুরো লেকশোর জেলায় ৩৩টি নারী সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ফাইন্ড ইয়োর ফিটের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সেইন মুসকাম্বো বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি আমরা চাই এই নারীরা মাছের বিনিময়ে যৌন শোষণের বিষয়ে সচেতন হোক। এর বিরুদ্ধে তাদের অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।’

মালাবিতে লিঙ্গসমতা আইন আছে। এ আইনে যৌন নিপীড়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ নিপীড়ন করলে তার ১০ লাখ কোয়াচা (স্থানীয় মুদ্রা) বা প্রায় ৯৭৪ মার্কিন ডলার জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের প্রয়োগ কেবল শুরু হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় এ আইন সম্পর্কে তথ্য খুব কম প্রচার করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি আমরা চাই এই নারীরা মাছের বিনিময়ে যৌন শোষণের বিষয়ে সচেতন হোক। এর বিরুদ্ধে তাদের অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।সেইন মুসকাম্বো, ফাইন্ড ইয়োর ফিটের প্রোগ্রাম ম্যানেজার

২০১৬ সালে মালাবি সরকার মৎস্য সেক্টরের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য ন্যাশনাল ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার পলিসি অনুমোদন করেছে। মৎস্য বিভাগের একজন পরিচালক ফ্রাইডে নজায়া বলেন, নীতিটি পুরোপুরি লিঙ্গ বিবেচনা করে না। কারণ, সম্প্রদায় স্তরে মাছ চাষের জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ। সৈকত গ্রাম কমিটি এখনো পুরুষদের দ্বারা পরিচালিত হয়। তিনি আরও বলেন, মাছ শিকারের ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা এখনো অনেক ছোট। এটাই তাঁদের মাছের বিনিময়ে যৌনতাসহ লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঝুঁকিতে ফেলেছে।

মৎস্য বিভাগের এই পরিচালক বলেন, এ সমস্যা সমাধানে মৎস্য বিভাগ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রকল্পে সহযোগিতা করছে। টিটুকুলানের মতো সমবায় সমিতিতে যোগ দিতে নারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

নজায়া বলেন, ‘আমরা উপ-আইন তৈরির জন্য জেলা পরিষদের সঙ্গে কাজ করছি। এর মধ্যে হ্রদ ও সৈকতে ভাসমান আশ্রয়কেন্দ্রে মাছ বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে। আমরা বাজারের শেড তৈরি করে মূল্যও নির্ধারণ করতে চাই, যেন নারীরা সেখানে মাছ কিনতে যেতে পারে। সৈকতে যেখানে বিনিময়মূলক যৌনতা হয়, সেখানে নারীদের আর না যেতে হয়।’

টিটুকুলানের মতো নারী সমবায় সমিতি সহায়তা করবে; তবে মানসিকতা পরিবর্তনেরও পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ফানুয়েল কাপুতে। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, এটি মানসিকতার পরিবর্তনের ব্যাপার। এটা বলছি, কারণ এমন কিছু ঘটনা রয়েছে, যেখানে আপনি সচ্ছল কিছু নারীকেও খুঁজে পাবেন, যাঁরা এসব কাজের সঙ্গে এখনো জড়িত।’

মালাবিতে লিঙ্গসমতা আইন আছে। এ আইনে যৌন নিপীড়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ নিপীড়ন করলে তার ১০ লাখ কোয়াচা (স্থানীয় মুদ্রা) বা প্রায় ৯৭৪ মার্কিন ডলার জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের প্রয়োগ কেবল শুরু হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় এ আইন সম্পর্কে তথ্য খুব কম প্রচার করা হয়েছে।

ক্যাথেরিনের জীবন এখন পরিবর্তনের পথে। বিনিময়মূলক যৌনতায় জড়িত থাকায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তবে এতে যে কোনো রোগে আক্রান্ত হননি, এ কারণে তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান…অধিকাংশ মানুষই (জেলেরা) অরক্ষিত যৌনতা পছন্দ করে। এসব নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই। আমি আসলে এখন লজ্জিত।’

‘আমি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু স্মৃতি এখনো আমাকে তাড়া করে। অনেক নারী আছেন, যাঁরা এখনো এ কাজ করছেন, এটা জেনে আমার বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠে। আমি এটা ঘৃণা করি। এটা বন্ধ করতে চাই,’ যোগ করেন ক্যাথেরিন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.