ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে দুই জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে, পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবির দুই সদস্যকে তাদের সহযোগীরা ছিনিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
এদিকে পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি সদস্যকে ধরিয়ে দিলে প্রত্যেকের জন্য ১০ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ। এছাড়াও পলাতক দুই জঙ্গি যেন দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য পুলিশ, র্যাব ও বিজিবিকে সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি সদস্য হলেন মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির এবং মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
এদের মধ্যে মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামিরের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুর গ্রামে এবং আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে দুই জঙ্গিকে আদালতে নেওয়া হচ্ছিল। ১২টার দিকে হঠাৎ পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে আগে থেকে প্রস্তুত থাকা একটি মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত পালিয়ে যায় দুই আসামি।
পুলিশের দাবি, জঙ্গিরা আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের দিকে স্প্রে ছোড়ার পরই চারদিকে ধোঁয়ার মতো হয়ে যায়। এরপরই জঙ্গিরা পালিয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে তাদের সহযোগীরা ছিনিয়ে নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, একটি মামলায় শুনানি শেষে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে তাদের সহযোগীরা পুলিশের চোখে স্প্রে ছিটিয়ে দেয়। এরপর পুলিশকে কিল-ঘুষি মেরে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা দুটি মোটরসাইকেলে করে রায়সাহেব বাজারের মোড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
ডিবি প্রধান বলেন, ঘটনার পরপর আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়েছি। আমাদের ডিবির সব টিম কাজ করছে। আশা করছি, দ্রুত তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করতে পারব।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, তাদের অন্য মামলার শুনানিতে হাজির করতে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছিল। শুনানি শেষে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে নেওয়ার সময় পুলিশের চোখে স্প্রে জাতীয় কিছু মেরে তারা পালিয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।