পবিত্র ঈদুল ফিতর কবে হবে, তা জানা যাবে আজ শুক্রবার। আজ শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার বিষয়ে সভায় বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। যদি আজ বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়, তাহলে পরদিন শনিবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে। পুরো বিষয় নির্ভর করছে চাঁদ দেখার ওপর। শুধু পবিত্র ঈদ নয়, হিজরি মাস গণনা করার জন্যও চাঁদ দেখা হয়, যা জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশে কীভাবে চাঁদ দেখা হয়, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ) মো. আনিছুর রহমান সরকার বলেন, চাঁদ দেখার জন্য জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি আছে।
১৮ সদস্যের এ কমিটির সভাপতি হলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, সহসভাপতি হন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক।
কমিটিতে অন্য সদস্যদের পাশাপাশি চারজন বিশিষ্ট আলেমও রয়েছেন। এ ছাড়া চাঁদ কমিটির সভায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব ও জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম এবং লালবাগ শাহি জামে মসজিদ ও চকবাজার শাহি জামে মসিজদের খতিবরা উপস্থিত থাকেন।
আনিছুর রহমান বলেন, এর আগে পত্রিকায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেখানে ফোন নম্বর উল্লেখ করে কোথাও কেউ চাঁদ দেখা গেছে কি না, সেটি জানতে চাওয়া হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সারা দেশের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষকেরা তথ্য দেন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেও তথ্য নেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ের চাঁদ দেখা কমিটিগুলো নিজ নিজ জেলায় চাঁদ দেখার তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির কাছে তথ্য পাঠায়।
সারা দেশে আবহাওয়া দপ্তরের থিওডোলাইট মেশিনের মাধ্যমেও চাঁদ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। আবার বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানও (স্পারসো) তথ্য দেয়। এ ছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহায়তায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারাও ঢাকায় চাঁদ দেখার জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পার্শ্ববর্তী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনের ছাদে থিওডোলাইট মেশিন স্থাপন করেন।
শরিয়াহ মোতাবেক দুজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি অথবা একজন পুরুষ ও দুজন নারী চাঁদ দেখার বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তা গ্রহণযোগ্য হয়। এভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য পাওয়ার পর জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখার বিষয়টি নির্ধারণ করে এবং পবিত্র ঈদের ঘোষণা দেয় বলে জানান আনিছুর রহমান সরকার।
এ প্রক্রিয়ায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি যখন ঈদ উদ্যাপনের ঘোষণা দেয়, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচারিত হতে থাকে। আর পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেলেই বেজে ওঠে সেই চিরচেনা গান, ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’।