১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যুবদের জুডো, কারাতে, তায়কোয়ান্দো (মার্শাল আর্ট) ও শুটিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মোট ৮ হাজার ৮৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেবে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। এর মধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ২৫০ ও নারী ৬০০।
গত সপ্তাহে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘যুবদের আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক এ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। সরকারি তহবিল থেকে এ টাকা খরচ হবে। ২২ নভেম্বর ২ হাজার ৩০০ জনকে দিয়ে প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ শুরু হবে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ হবে ১৫ দিনের। প্রতি বিষয়ে তিন দিন করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ঢাকার বিকেএসপি, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও দিনাজপুরের বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিকেএসপি।
বিকেএসপির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আবেদন যাচাই–বাছাইয়ের মাধ্যমে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁদের আবাসন, খাবার, ট্র্যাকস্যুট, টি-শার্ট ও কেডস দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেককে মোট ৪ হাজার ২০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা ও সনদ দেওয়া হবে।
বিকেএসপি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ প্রকল্পের আওতায় যে চারটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, সেগুলো বিকেএসপিতে চালু রয়েছে। যাঁরা বিকেএসপিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান না, তাঁদের জন্য বড় পরিসরে এ উদ্যোগ। কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুবদের আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। বিভিন্ন পরিস্থিতির মুখে নিজেকে যাতে রক্ষা করতে পারেন, সে জন্য বাংলাদেশে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিকেএসপি বলছে, এর মাধ্যমে আত্মরক্ষার কৌশল শেখার পাশাপাশি শরীরচর্চাও হয়, জীবনযাপনে পরিবর্তন আসে। নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে আত্মনির্ভরশীলতার মানসিকতা তৈরি হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণের যোগ্যতা এসএসসি পাস।
তবে এ প্রকল্পের বিষয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার এক ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে স্ট্যাটাসের একটি শব্দ সংশোধন করেন আসিফ।
প্রথমে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া উল্লেখ করেন, ‘দেশের সাতটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীদের কারাতে, জুডো, তায়কোয়ান্দো ও আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’ আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেন। পরে তা সংশোধন করে বলেন, ‘জুডো, কারাতে, তায়কোয়ান্দো ও শুটিং বিষয়ে আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’ ‘আগ্নেয়াস্ত্রের’ পরিবর্তে ‘শুটিং’ শব্দটি ব্যবহার করেন।
প্রকল্পের বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া সচিব মাহবুব-উল-আলম বলেন, দেশে যুবকদের অনেকে মাদকে আসক্ত। তাঁদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের চারটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষা করা যাবে।
‘শুটিং’–এর বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ঢাকার বিকেএসপিতে শুধু শুটিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পয়েন্ট ২২ ক্যালিবারের রাইফেল দিয়ে ডামি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের পর যেকোনো সময় এটি কাজে লাগবে বলে মনে করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।