যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ শুল্ক আলোচনা: প্রথম দিনে মিলেছে শুল্ক হ্রাসের ইঙ্গিত

0
21
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনার তৃতীয় ধাপের প্রথম দিনের বৈঠক শেষ হয়েছে। এদিন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ওপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে। তবে কত শতাংশ শুল্ক হ্রাস পাবে, সে বিষয়ে আলোচনা এখনো হয়নি। বৈঠকের আরও দুই দিন বাকি রয়েছে।
 
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এবং অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ইউএসটিআরের (United States Trade Representative) সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ। পুরো আলোচনা প্রক্রিয়ার সমন্বয় করছে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
 
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সময় বুধবার (৩০ জুলাই) ভোরে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ওপর যে পাল্টা শুল্ক আছে, তা কমবে—এই বিষয়ে ইউএসটিআরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি। তবে ঠিক কতটা কমবে, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। আলোচনার বাকি অংশ এখনো সামনে।’
 
মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মর্তুজা জানান, ‘আলোচনা এখনো চলছে। অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র একমত হয়েছে। তবে আলোচনার আরও দুই দিন বাকি আছে, এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
 
আলোচনার আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ বড় পরিসরে আমদানির উদ্যোগ নেয়। সরকারি পর্যায়ে আগামী এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেড় বিলিয়ন ডলারের গম, ডাল ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
 
জি-টু-জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে ৭ লাখ টন গম কেনার একটি চুক্তি ইতোমধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং আরও ২ দশমিক ২০ লাখ টন গম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এলএনজি আমদানির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার বিষয়েও ভাবছে সরকার।
 
এ ছাড়া বেসরকারি খাত থেকেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে অতিরিক্ত ১ দশমিক ৫ থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলসহ শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান—টিকে গ্রুপ, মেঘনা ও সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিরা মার্কিন রপ্তানিকারকদের সঙ্গে ক্রয় চুক্তির আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন।
 
বাণিজ্যসচিব জানিয়েছেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের এই সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বাড়তে পারে। তবে এই পরিকল্পনার পুরোটাই এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.