যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব আংশিকভাবে মেনে নিতে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তবে এই প্রস্তাবের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিয়ে আরও আলোচনার দাবি জানিয়েছে তারা।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবে উল্লিখিত বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া মেনে জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে হামাস। তবে বন্দিবিনিময়ের জন্য মাঠ পর্যায়ের শর্ত মানতে হবে।
এদিকে গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ও ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয় নিয়ে হামাস আরও আলোচনা করতে চায়। সংগঠনটি বলেছে, বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শুক্রবার হামাসকে তাঁর প্রস্তাব মেনে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি বলেন, রোববার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রস্তাব মেনে নিতে হবে। নয়তো হামাসকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।
ট্রাম্পের এই হুমকির কয়েক ঘণ্টা পর হামাস আংশিকভাবে প্রস্তাব মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মিকে ফিরিয়ে দিতে হবে। মৃত জিম্মিদের দেহাবশেষও হস্তান্তর করতে হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলের হাতে আটক গাজার শত শত বাসিন্দাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এক বিবৃতিতে হামাস আরও বলেছে, তারা গাজা উপত্যকার শাসনভার একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি সংস্থার (টেকনোক্র্যাট) কাছে হস্তান্তর করতে চায়। এই সংস্থা ফিলিস্তিনি জাতীয় ঐকমত্য এবং আরব ও ইসলামি বিশ্বের সমর্থনের ভিত্তিতে গঠিত হবে।
বর্তমানে গাজায় ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মি আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে জীবিত আছেন ২০ জন।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট গতকাল বলেন, প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে হামাসের জন্য পরিণতি হবে ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’। হামাসের হাতে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে এগোনোর সুযোগ আছে। কিন্তু তারা তা না চাইলে, মর্মান্তিক পরিণতি অপেক্ষা করছে।
হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ গত সোমবার ২০ দফাবিশিষ্ট একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এতে সম্মতি জানান। ওই পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে, গাজা শাসনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। ভবিষ্যতে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের দরজাও খোলা রাখা হয়েছে পরিকল্পনায়।
তবে পরিকল্পনাটি ঘোষণার কিছু সময় পর নেতানিয়াহু এক ভিডিও বিবৃতিতে পুনরায় বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিরোধী। প্ররিকল্পনায় কোথাও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের কথা লেখা নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, আমরা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ঘোর বিরোধী।’