মেসিদের অসহায় দর্শক বানিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজি

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ

0
7
কী হচ্ছে সেটিই যেন বুঝতে পারছিলেন না মেসি! পেছনে থাকা জোয়াও নেভেস ২ গোল করেছেন ইন্টার মায়ামির ৪–০ গোলের জয়ে, এএফপি

‘পিএসজি দুই পা-ই দিয়ে রেখেছে কোয়ার্টার ফাইনালে’—দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়া ঠিক আগে বললেন ডিএজেডএনের এক ধারাভাষ্যকার!

আটলান্টার মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে তখন লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামির বিপক্ষে ৪-০ গোলে এগিয়ে পিএসজি। তবে গোলের ব্যবধানের চেয়ে প্রথমার্ধে মাঠের খেলায় মেসিদের চেয়ে দুস্তর ব্যবধানে এগিয়ে ছিল পিএসজি। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা কেন ব্যবধানটা আরও বড় করে প্রথমার্ধটা শেষ করতে পারেনি, প্রশ্ন করা যায় সেটি নিয়েই। আর মাঠে মেসিও ছিলেন বড্ড নিষ্প্রভ। তাঁকে এতটা অসহায় এর আগে কখনো লেগেছে কি না সন্দেহ! প্রথমার্ধে এমন বাজে খেলা মেসিরা দ্বিতীয়ার্ধে ৪ গোলের ব্যবধান ঘুচিয়ে ফেলবেন, এমনটা ভাবতেই পারেননি ধারাভাষ্যকার।

প্রথমার্ধের তুলনায় অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে ভালোই খেলেছে ইন্টার মায়ামি। স্কোরেও প্রমাণ আছে। মেসিরা যে আর গোল খাননি। বিদায় নিয়েছেন ৪-০ গোলে হেরেই।

প্রথমার্ধের অসহায় মেসিরা দ্বিতীয়ার্ধে গোল করার সুযোগও পেয়েছিলেন। সবচেয়ে সহজ সুযোগটা নষ্ট করেছেন লুইস সুয়ারেজ। মেসি দারুণ এক ক্রস খুঁজে নিয়েছিল সুয়ারেজকে। সামনে শুধু গোলরক্ষক, উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড বলে-পায়ে ঠিকমতো সংযোগই করতে পারলেন না!

দলকে প্রথম গোল এনে দেওয়ার পর জোয়াও নেভেস, এএফপি

এততরফা ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে শেষ আটে উঠেছে পিএসজি। অথচ ম্যাচটিতে নিয়ে কম বিজ্ঞাপন হয়নি। সাবেক ক্লাবের মুখোমুখি মেসি, সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিল এটিই। কিন্তু ‘মনঃকষ্ট’ নিয়ে যে ক্লাব ছেড়েছিলেন, সেই পিএসজির সামনে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারলেন না মেসিরা। উল্টো সাবেক শিষ্যর দলকে হারিয়ে লুইস এনরিকের দল ইউরোপ জয়ের পর এখন বিশ্ব জয়ের পথে এগিয়ে গেল আরেকটু। কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজির প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গো অথবা জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখ। আজ রাতেই মুখোমুখি হবে দল দুইটি।

ইন্টার মায়ামির চেয়ে ফ্ল্যামেঙ্গো কিংবা বায়ার্ন যে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের বড় পরীক্ষা নেবে সেটি তো জানাই। তবে আজ প্রথমার্ধে মেসিদের নিয়ে যেভাবে খেলেছে পিএসজি, তেমন খেলতে পারলে পিএসজির শেষ চারে ওঠার সম্ভাবনাই মেসি।

দর্শকদের বিদায় জানাচ্ছেন মেসি, এএফপি

আটলান্টায় আজ ম্যাচের শুরুর ১০ মিনিট তো মাঠে একটি দলই ছিল—পিএসজি। সে সময় শতকরা ৮৭ ভাগ সময় বল ছিল পিএসজির খেলোয়াড়দের দখলেই। মেসিকে তো খুঁজেই পাওয়া যায়নি। পর্তুগিজ মিডফিল্ডার জোয়াও নেভেস ৬ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন ১-০ গোলে।

এরপর আক্রমণের পর আক্রমণে ইন্টার মায়ামিকে ব্যতিব্যস্ত করেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না পিএসজি। ৩৯ মিনিটে আবার সেই নেভেসের গোলে খোলে মায়ামির গোল মুখ। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় আরও দুবার গোল উৎসব করে পিএসজি। ৪৪ মিনিটে তমাস আভিলেসের সেই আত্মঘাতী গোল এরপর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে আশরাফ হাকিমি ব্যবধানটা ৪-০ বানিয়ে ফেলেন।

মেসির মাঠে মুখ খুবড়ে পড়ার এই ছবিটাই যেন ম্যাচের সার–সংক্ষেপ, রয়টার্স

মেসির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে হার নিয়ে তখন তো গবেষণাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যিস পিএসজি আর গোল পায়নি, তাই আর ফিরে আসেনি ২০২০ চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন-বার্সা কিংবা ২০০৯ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনা-বলিভিয়া ম্যাচের স্মৃতি। বলিভিয়ার কাছে মেসির আর্জেন্টিনা হেরেছিল ৬-১ গোলে, বায়ার্নের কাছে ৮-২ গোলে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.