মুশফিকের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ৩৪৯

0
110
মুশফিকুরে দ্রুততম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ৩৪৯

লিটন ৭০ রান করে ফিরেছেন নিজের ভুলেই

লিটন ৭০ রান করে ফিরেছেন নিজের ভুলেই

বিপদটা ঘটে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে। দুই প্রান্তের দুটি বলই ৫ ওভার পুরোনো। সুইং–টুইং কিছুই হচ্ছিল না। আইরিশ মিডিয়াম পেসারদের বোলিংয়ে ওই মুহূর্তে নিজেদের ভুল ছাড়া আউট হওয়ার কোনো উপায় নেই। ওই ভুলটা করলেন তামিম। গ্রায়াম হিউমের বলে শর্ট ফাইন লেগে বল ঠেলে লিটন দৌড় দিলেন এক রানের জন্য। তামিমও নন–স্ট্রাইক থেকে সাড়া দিলেন সজোরে দৌড় দিয়ে। কিন্তু বলটা খুব দ্রুতই মার্ক এডেয়ারের হাতে গেল। এডেয়ারও সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙলেন তামিম ক্রিজে পৌঁছানোর আগেই। ৩১ বলে ৪টি চারে ২৩ রান করে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। নিজের ৩৪তম জন্মদিনটা আর বড় ইনিংসে রাঙানো হলো না।

নাজমুল ইনিংস বড় করতে পারেননি, যদিও চমৎকার ব্যাটিং করেছেন তিনি

নাজমুল ইনিংস বড় করতে পারেননি, যদিও চমৎকার ব্যাটিং করেছেন তিনি

তবে মেঘলা সিলেটে আলো ছড়াচ্ছিল লিটনের ব্যাট। লিটনকে থামাতে বলবার্নি পেস, অফ স্পিন, বাঁহাতি স্পিন—সবই ব্যবহার করেছেন। কিন্তু কিছুতেই রানের গতি কমছিল না। উল্টো ঝুঁকিহীন ব্যাটিংয়ে রান বাড়ছিল তরতরিয়ে। শুরুতে ৫০-৬০ স্ট্রাইক রেটে খেলা লিটন ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৪ বলে। আইরিশ বোলাররাও ওভারপ্রতি একটি-দুটি বাউন্ডারি মারার বল দিয়ে লিটনের কাজটা সহজ করে দিচ্ছিলেন। লিটন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দুই হাজার রানও পূর্ণ করেন এর মধ্যেই। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরিও হাতছানি দিচ্ছিল লিটনকে। কিন্তু নিজের ভুলে সেটি হলো না। প্রথম ওয়ানডের মতো আজও শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ তোলেন লিটন। ৭১ বলে ৩টি চার ও ছক্কায় সাজানো ৭০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটির এমন সমাপ্তি হতাশারই।

মুশফিক–তাওহিদের জুটি ছিল ১২৮ রানের

মুশফিক–তাওহিদের জুটি ছিল ১২৮ রানের

হতাশ করেন নাজমুলও। ৫৯ বলে ফিফটি করে কী দারুণ ব্যাটিংই করছিলেন তিনি! কিন্তু তিনিও লিটনের মতোই আউট হয়েছেন নিজের ভুলে। গ্রাহাম হিউমের শর্ট বলে ব্যাট ছুঁইয়ে কট বিহাইন্ড হন এই বাঁহাতি। ৭৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৩ রান করে থামে নাজমুলের ইনিংসটি। হিউম তাঁর আগে আউট করেন সাকিব আল হাসানকেও (১৭)। ৩৩.২ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৪ উইকেটে ১৯০।

শুরুর তাণ্ডবটা ছিল লিটন–নাজমুলের

শুরুর তাণ্ডবটা ছিল লিটন–নাজমুলের

সেখান থেকে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের মতোই আরও একটি বিস্ফোরক জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয়। দুজনের জুটিতে মাত্র ৭৮ বলে আসে ১২৮ রান। মুশফিকই ছিলেন জুটির প্রাণ। আগের ম্যাচে ২৬ বলে ৪৪ রানের টি-টোয়েন্টিসুলভ ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। আজ সে গতিতেই খেলেছেন। হৃদয় এর মধ্যে ৩৪ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে এডেয়ারের বলে কট বিহাইন্ড হন। আউট হন ইয়াসির আলীও। কিন্তু তাতে কমেনি মুশফিকের রানের গতি। মাত্র ৩৩ বলে ৫০ রান করেও তিনি এগিয়েছেন দেড় শ স্ট্রাইক রেটে। এক্সট্রা কাভার দিয়ে তিনি বারবার বাউন্ডারি খুঁজে নিয়েছেন। দারুণ কিছু স্কয়ার কাটও ছিল তাঁর ইনিংসে। প্রিয় স্কুপ ও সুইপ শটে বারবার বলবার্নির পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য করেছেন।

এক রানের জন্য ফিফটি পাননি তাওহিদ হৃদয়

এক রানের জন্য ফিফটি পাননি তাওহিদ হৃদয়

শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ বলে মিডউইকেটে বল ঠেলে গড়েছেন বাংলাদেশের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড। ৬০ বলে ১৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় সাজানো ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। মুশফিক নবম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দিন স্পর্শ করেছেন ৭ হাজার রানের মাইলফলকও। তাঁর ইনিংসের সৌজন্যে বাংলাদেশও গড়েছে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ সংগ্রহ—৩৪৯ রান। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে করা ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.