আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিসের ঋণমান কমানোর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের ফল পেতে আরও সময় লাগবে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় বাংলাদেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনীতি একটি বড় রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকার এরইমধ্যে নানা কর্মকৌশল হাতে নিয়েছে। এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক ফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে। রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশা, দ্রুত ঢাকা সফর করে সার্বিক দিক মূল্যায়ন করবে মুডিস। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার পরই সরকারের নেয়া নীতি ও উন্নয়নের সঠিক মূল্যায়নে সক্ষম হবে।
মুডিস রেটিংস গত সপ্তাহে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমায়। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ঋণমান যাচাইকারী সংস্থাটি সরকারের ইস্যুয়ার ও সিনিয়র আনসিকিউরড রেটিংস ‘বি১’ থেকে ‘বি২’-এ নামিয়ে আনে। একইসঙ্গে, দেশের অর্থনীতির পূর্বাভাসে পরিবর্তন এনে স্থিতিশীল থেকে ঋণাত্মক করেছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুডিস।
মুডিস রেটিং এজেন্সি ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের রেটিং বা ঋণমান দিয়ে আসছে। এরপর থেকে ১৪ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো সংস্থাটি তাদের পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সিঙ্গাপুর থেকে প্রকাশিত ওই রেটিংস প্রতিবেদনে মুডিস জানায়, বাংলাদেশের স্বল্পমেয়াদি ইস্যুয়ার রেটিংস নট প্রাইম বা শ্রেষ্ঠ গুণসম্পন্ন নয় হিসেবে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের মাত্র দুদিনের মাথায় আবার দেশের ছয়টি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণমানও কমায় সংস্থাটি। গত বুধবার (২০ নভেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণমান কমানোর কথা জানায় মুডিস।
বাংলাদেশের রেটিং কমানো প্রসঙ্গে সংস্থাটি বলছে– সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পর সরকার পরিবর্তনের ফলে উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি, নিম্ন প্রবৃদ্ধি সরকারের তারল্যের ঝুঁকি, বৈশ্বিক ভঙ্গুরতা এবং ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
মুডিস আরও বলছে, চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দুর্বল প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে ঘাটতি পূরণের জন্য স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল করছে এবং এর ফলে তারল্য ঝুঁকি বাড়ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে পাওয়া ঋণের পরিমাণ বাড়লেও, গত কয়েক বছরে রিজার্ভের স্থিতিশীলতা কমায় বাহ্যিক কিছু আশঙ্কার ঝুঁকি রয়ে গেছে।