মুখের স্বাস্থ্য নিয়ে বাড়ুক সচেতনতা

0
11
দাঁত

সুস্থ দাঁত, সুস্থ মন—বিশ্ব ওরাল হেলথ ডের এবারের প্রতিপাদ্য। মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় আত্মবিশ্বাসী হতে হবে, তবেই সার্বিকভাবে সুস্থ থাকবে দেহ ও মন। ধরুন, মুখে দাঁত নেই, ভেঙে গেছে বা পড়ে গেছে বা আঁকাবাঁকা, উঁচু, ভাঙা দাঁত, দাঁতে ব্যথা বা শিরশির করে কিংবা রং বিবর্ণ, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে বা মাড়ি ফুলে আছে, মুখে দুর্গন্ধ, কিছু খেলেই দাঁতের ফাঁকে ঢুকে ব্যথা হয়, জ্বালাপোড়া করে—এমন সব ক্ষেত্রে দৈনন্দিন জীবন যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে।

গবেষণা বলছে, মুখের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে শুধু মুখের অভ্যন্তরে রোগ বা জটিলতা হয় এমন নয়, এ সংক্রমণ রক্তে মিশে শরীরের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে; এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যও হুমকিতে ফেলে।

অন্যদিকে মুখের সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ দাঁত আপনার ইতিবাচকতা, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ, আত্মসম্মান, বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, জীবনযাত্রার মান, কাজে মনোযোগ, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার শক্তি, কাজে আগ্রহ, উদারতা, স্মরণশক্তি, প্রফুল্লতা, সজীবতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে পারে।

মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার কিছু টিপস

  • নিয়মিত মুখ পরিষ্কারে কোনো অবহেলা নয়। খুব সহজ, দিনে মাত্র দুবার—সকাল ও রাতে খাওয়ার পর দুই মিনিট করে নরম টুথব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত এবং জিহ্বা পরিষ্কার করা উচিত। এরপরও প্রায় ২৫ শতাংশ স্থান, মানে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে সাধারণ টুথব্রাশ পৌঁছায় না বলে ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ বা ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।
  • দাঁত ব্রাশের অভ্যাস এখন গ্রামপর্যায়ে পৌঁছে গেলেও এখনো অনেকে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করেন না। ইন্টারনেটের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে অথবা ডেন্টিস্টদের কাছ থেকে ব্রাশের নিয়ম জেনে নেওয়া জরুরি। না হলে উল্টো ক্ষতি হতে পারে।
  • যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মুখের অতিরিক্ত শুষ্কতা, কিডনির রোগ, ক্যানসার, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শে মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন।

  • মিষ্টি বা চিনির তৈরি খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণে এনে স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার, যেমন মৌসুমি শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, ডিম, ছোট মাছ, টক দইসহ পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
  • মুখের মধ্যে বেশির ভাগ রোগে শুরুতে তেমন উপসর্গ প্রকাশ হয় না। সে কারণে যদি বছরে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়, তবে যেকোনো রোগ শুরুতেই শনাক্ত হয় আর এর চিকিৎসাও সহজ ও ব্যয় আয়ত্তে থাকে।

চিকিৎসক নির্বাচনেও সচেতনতা জরুরি। কারণ, আমাদের দেশে অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের পাশাপাশি অগণিত ভুয়া চিকিৎসক রয়েছেন।

  • ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজমহাসচিববাংলাদেশ ফেডারেশন অব ডেন্টাল সায়েন্স (বিএফডিএস)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.