মুখের ভেতরে অনেকগুলো অংশ আছে। তার মধ্যে জিব, গাল ও ঠোঁটের ভেতরের অংশ; মাড়ি ও জিবের নিচের অংশে ক্যানসার বেশি দেখা যায়। আরও ভেতরের দিকে টনসিল, জিবের পেছনের অংশে ক্যানসার হওয়ার হারও কম নয়।
প্রথমত জানা দরকার, এই ক্যানসার হওয়ার প্রধান কারণ কী কী। তামাকজাতীয় দ্রব্য যেমন ধূমপান, জর্দা, গুল, সাদা পাতা এগুলোর সঙ্গে মুখের ক্যানসারের ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে। সঠিকভাবে মুখ পরিচ্ছন্ন না করাটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তা ছাড়া ধারালো দাঁত, কিছু ভাইরাস এবং বংশগত কারণেও মুখের ক্যানসার হয়ে থাকে।
লক্ষণ
প্রাথমিক অবস্থায় মুখের ভেতরে ঘা হয়, সহজে যা সারে না। অথবা ঘা ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে, খাবার খেতে সমস্যা হচ্ছে, এমনকি রক্তও যেতে পারে। আরেকটু বেশি তীব্র হলে মুখের হা করার ক্ষমতা কমে আসতে পারে, গলায় দেখা দিতে পারে চাকা। রোগটি অন্য কোথাও ছড়িয়ে গেলে সেই অনুযায়ী উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
কী করবেন
তামাকজাতীয় দ্রব্য পরিহার, মুখের হাইজিন বা পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা এবং মুখের যেকোনো সমস্যায় সময়ক্ষেপণ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে রোগটি প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিকার করা সম্ভব। এ ধরনের রোগে অপারেশন, রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপির ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক রেডিওথেরাপি সরঞ্জাম, প্রযুক্তিসহ মুখের ক্যানসারের সব প্রকার চিকিৎসা বাংলাদেশে বিদ্যমান।
ক্যানসার ছোঁয়াচে নয়। তাই ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা বাসায় অন্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। তবে তাঁদের কিছু বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। যেমন পরিষ্কার এবং সুষম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, জামাকাপড় এবং ব্যবহৃত জিনিস পরিষ্কার রাখা, হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার, মুখের যথাযথ যত্ন, জ্বর বা সংক্রমণ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। মনে রাখতে হবে, ক্যানসার রোগের ক্ষেত্রে মূল চিকিৎসার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা, মানসিক অবস্থার যত্ন এবং সচেতনতার সম্মিলিত ভূমিকা রয়েছে।
লেখক: ডা. মাহফুজুল রিয়াদ, সহকারী অধ্যাপক, ক্যানসার বিভাগ, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল