মিশ্র বাগানে বাজিমাত নোভেল চাকমার

0
49
টপলেডি জাতের পেঁপে বাগান করে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন দীঘিনালার নোভেল চাকমা

উচ্চশিক্ষা শেষ করে চাকরির পেছনে দৌড়াননি নোভেল চাকমা। নিজ গ্রামে ফিরে শুরু করেন মিশ্র ফলের বাগান। আম, মাল্টা, বরই ও পেঁপেসহ নানা ফলে ভরে গেছে তার বাগান। বাগান থেকে বছরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। এ বছর বাগান থেকে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন পেঁপে বিক্রি করা যাবে; যার বাজারমূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা। বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিকের।
মিশ্র ফলের বাগান করে বাজিমাত করেছেন দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের দাদন কারবারিপাড়ার উচ্চশিক্ষিত তরুণ নোভেল চাকমা। মাত্র দুই লাখ টাকা মূলধন দিয়ে শুরু করা এ বাগানপ্রেমী এখন সফল উদ্যোক্তা।

চলতি বছর এক একর জমিতে নতুন করে টপলেডি জাতের পেঁপে বাগান গড়ে তুলেছেন নোভেল চাকমা। দেখা যায়, বাগানজুড়ে রয়েছে সারি সারি ১২ শতাধিক পেঁপে গাছ। পেঁপের ভারে ন্যুয়ে পড়ছে গাছগুলো। ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আনুমানিক ৬০ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি ৩০ টাকা দামে বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা। বাগান সৃজনে খরচ হয়েছে মাত্র ৪ লাখ টাকা। নোভেল চাকমার রয়েছে ৫ একর আম বাগান, ২ একর বরই বাগান ও ১ একর মাল্টা বাগান।

ভারত থেকে স্নাতক শেষ করে দেশে ফিরে ২০২০ সালে মাত্র ২ লাখ টাকা মূলধন নিয়ে নোভেল চাকমা শুরু করেন মিশ্র ফলের বাগান সৃজনের কাজ। এরই মধ্যে শেষ করেন স্নাতকোত্তর ও এমবিএ। উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের দাদন কারবারিপাড়ার এই যুবক চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট নোভেল। তার তিন ভাইবোন চাকরিজীবী হলেও নিজে চাকরির পেছনে না ঘুরে দিনবদলের স্বপ্ন বুনেন মিশ্র ফলের বাগানে। বাগান শুরুর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইতোমধ্যে তিনি হয়েছেন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। পেয়েছেন সফল উদ্যোক্তার পরিচিতিও।

নোভেল চাকমার বাগানে কাজ করে পরিবার ও ছেলেমেয়েদের খেলাপড়ার খরচ চালান আলো জ্যোতি চাকমা ও শিখা চাকমা। তারা জানান, নোভেল চাকমার মাল্টা, আম, বরই ও পেঁপে বাগানে সারাবছরই কোনো না কোনো কাজ থাকে। তার এ বাগানে কাজ করেই তারা পরিবার ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালান।

কথা হয় তরুণ উদ্যোক্তা নোভেল চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছা এবং আগ্রহ ছিল আমার। তাই লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে মাত্র দুই লাখ টাকা মূলধন দিয়ে শুরু করি রেডলেডি পেঁপের বাগান। এ বাগানই দিনবদলের পথ দেখিয়েছে আমাকে। শুধু তাই নয়, এই বাগান থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে আমি আম, বরই, মাল্টা ও টপলেডি পেঁপেসহ নানা প্রজাতির মিশ্র ফলের বাগান সৃজন করেছি। বর্তমানে আমার বাগানে ১০
থেকে ১৫ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।’

চাকরির পেছনে না ঘুরে শিক্ষিত বেকার যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.