রাজধানীর মিরপুরে দোকানে ঢুকে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে (৪৭) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।
এরপর দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাটারিচালিত এক অটোরিকশাচালককে গুলি করে। তাঁর নাম আরিফ হোসেন (১৮)। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি আছেন।
হাসপাতালে আহত অটোরিকশাচালক আরিফ বলেন, দুই যুবক হেলমেট পরা অবস্থায় দৌড়ে তাঁর রিকশায় ওঠে তাঁর কোমরে পিস্তল ঠেকিয়ে দ্রুত চালাতে বলে। দেরি হওয়ায় তারা তাঁকে গুলি করে।’
পরে এক পথচারী তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন। আরিফ পল্লবীতে থাকেন।

তার ঠিক আগেই সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে গোলাম কিবরিয়া মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে হার্ডওয়্যারের একটি দোকানে আক্রান্ত হন বলে পুলিশ জানায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কিবরিয়া দোকানে ঢোকার দু–তিন সেকেন্ডের মধ্যে কয়েকজন দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে তাঁকে গুলি করতে শুরু করে। দুর্বৃত্তদের একজনের পরনে পাঞ্জাবি, একজনের গায়ে শার্ট ও আরেকজনের গায়ে শার্টের ওপর শীতের চাদর জড়ানো ছিল। প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট ও মুখে মুখোশ ছিল। এ সময় দোকানে ৯ জন ছিলেন। দুর্বৃত্তদের একজন কিবরিয়াকে গুলি করতে শুরু করলে ভয়ে দোকান থেকে আগের লোকজন বেরিয়ে যান। আর দুজন লুকিয়ে পড়েন। কিবরিয়াকে দুজন এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় কিবরিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে আরও তিনটি গুলি করে দুর্বৃত্তরা দ্রুত বেরিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় কিবরিয়াকে শেরেবাংলা নগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।

রক্তাক্ত অবস্থায় গোলাম কিবরিয়াকে শেরেবাংলা নগরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ওয়ার্ড মাস্টার আবুল বাশার বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে স্বজনেরা রক্তাক্ত অবস্থায় গোলাম কিবরিয়াকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, কিবরিয়াকে গুলি করার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাস্তার ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানা যায়নি।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, গোলাম কিবরিয়া পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। তাঁর কোনো শত্রু ছিল না। তাঁর গায়ে ৯টি গুলি লেগেছে। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে মিরপুর সাড়ে ১১-তে ফলপট্টি সংলগ্ন ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে।


















