মালয়েশিয়ার নতুন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল আজ শনিবার দুপুরে ঢাকায় আসছেন। দু’দিনের বাংলাদেশ সফরে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানান, কীভাবে বাংলাদেশ থেকে দ্রুত এবং আরও বেশি সংখ্যক কর্মী পাঠানো যায়, তা নিয়েও আলোচনা হবে।
অনিয়মের অভিযোগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে মালয়েশিয়া। ২০২১ সালে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর গত আগস্ট থেকে আবার কর্মী নিচ্ছে। গত ছয় মাসে পৌনে ৩ লাখ কর্মীর চাহিদাপত্র এলেও ৬০ হাজারের মতো বাংলাদেশি যেতে পেরেছেন দেশটিতে।
‘সিন্ডিকেট’ নামে পরিচিত ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সি এবং পরে যুক্ত হওয়া ৭৫টি কর্মী পাঠাচ্ছে। কর্মীপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৮০ টাকা খরচ নির্ধারণ করা হলেও, চার-পাঁচ গুণ টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কাজ না পাওয়া এজেন্সিগুলোর অভিযোগ, সিন্ডিকেটের কারণেই কর্মী পাঠাতে ধীরগতি এবং উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হচ্ছে। সমঝোতা স্মারক সংশোধন করে সব কাজ দেওয়ার দাবি করা হয়েছে।
ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেছেন, সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। কর্মী পাঠাতে যেসব সমস্যা আসছে, সেগুলো নিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হবে। কিন্তু সমঝোতা স্মারকে পরিবর্তন করতে হলে দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আলোচনা হতে হবে।
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট বিতর্কে গত বৃহস্পতিবার রিক্রুটিং এজেন্সির সংগঠন বায়রার সভায় হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। সংগঠনটির মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেছেন, অন্যান্য দেশ থেকে যে প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়া কর্মী নিয়োগ করে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হোক। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে এ দাবি জানানো হয়েছে। তা মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। বায়রা মহাসচিব জানান, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার আগের সরকারের শর্তের কারণে দেশটির পছন্দের এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে মাত্র ১০টি এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করেছিল। সীমিত সংখ্যক এজেন্সি কাজ পাওয়ায় গতবারের মতো এবারও দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। গত নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকার বিদেশি কর্মী নিয়োগে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও সম্পৃক্ত করেছে। তাই মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুরুত্ব পাচ্ছেন। তিনি আগামীকাল রোববার নিজ দেশে ফিরে যাবেন।