মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে

0
11
পুত্রজায়ায় মালিয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওয়ংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলছবি: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে পাওয়া

মালয়েশিয়া আগামী কয়েক মাসে এক থেকে দেড় লাখ বিদেশি শ্রমিক নিতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, লোক নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওয়ং। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি লোক নেওয়া হবে।

মালয়েশিয়ায় আজ বৃহস্পতিবার দেশটির তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বিকেলে তাঁর ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে সব রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে কর্মী পাঠাতে পারে, সেই সুযোগ করে দিতে দেশটিকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁরা এটি ভালোভাবে বিবেচনা করে দেখবেন এবং অচিরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

মালয়েশিয়া শ্রমবাজার নিয়ে আলোচনা করতে ১৩ মে আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিনিধিদল দেশটি সফরে গেছে। আজ মালয়েশিয়ার তিনজন মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়েছে। মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মানবসম্পদমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে বলে ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত বন্ধু। গত বছর বাংলাদেশ সফরের সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ থেকে যেতে না পারা কর্মীদের দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ করে দেবেন। এটা নিয়ে পরে আরও আলোচনা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। দফায় দফায় কর্মীদের নেবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া। এসব তথ্য উল্লেখ করে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ভিডিও বার্তায় বলেন, প্রথম দফায় ৭ হাজার ৯২৬ জন কর্মীকে নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাঁদের মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তাকর্মী, নার্স, কেয়ারগিভারসহ দক্ষ কর্মী নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তাঁরা আশাবাদী। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় এটা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। যাঁরা মালয়েশিয়ায় আসতে চান, তাঁদের জন্য সত্যিকারের কল্যাণকর কিছু করাই সরকারের লক্ষ্য।

মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকেরা সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা পান। তাঁদের যেন অন্য দেশের শ্রমিকের মতো মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হয়, সে অনুরোধ দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে করা হয়েছে। এটা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ভিডিও বার্তায় আরও জানানো হয়, বাংলাদেশি যেসব শ্রমিক অবৈধ হয়ে গেছেন, তাঁদের বৈধ করে দিতে বৈঠকে অনুরোধ করেছেন প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা। এর জবাবে তাঁরা বলেছেন, এটা মাঝেমধ্যে করা হয়; সর্বশেষ গত বছর করা হয়েছিল। তবে যাঁদের ভিসার মেয়াদ নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে এটা করা যায় না। তাঁদেরও বিবেচনায় নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অনেক সময় নিয়োগকর্তার কারণে শ্রমিকেরা ভিসা নবায়ন করতে পারেন না। তাঁরা এটা বিবেচনা করে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.