পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘মার্কিন প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ণ হলেও বিশ্লেষণ করে দেখা হবে এতে আমলে নেওয়ার মতো কোনো বিষয় আছে কিনা।’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে সমালোচনার জবাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। সোমবার ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, এ প্রতিবেদন প্রতিবছর বের করা হয়। এর কিছু মৌলিক ত্রুটি আছে। প্রতিবেদন নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে আমরা বলেছিলাম। এ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও রক্ষা করা হয়নি। তিনি বলেন, প্রতিবেদনের তথ্য মুক্ত উৎস থেকে নেওয়া হয়। প্রতিবেদনটি স্ববিরোধী। এতে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাক্স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিবেদনে অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে মুক্ত উৎস থেকে তথ্য নেওয়ার। এতে এটাই প্রমাণ হয়, গণমাধ্যমকে কোনো খবর তৈরিতে সরকার বাধা দিচ্ছে না।
দ্বিতীয় উদাহরণ হিসেবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে কিছু এনজিও, আইএনজিও এবং সিএসওর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অধিকার। খুব পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে অধিকারের কার্যক্রম পরিচালনার বৈধ নিবন্ধন নেই। অধিকার নিবন্ধন নবায়নের যে আবেদন করেছিল, তা আমলে নেওয়া হয়নি। বিষয়টি উচ্চ আদালতে আছে। অধিকারের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। প্রতিবেদনে এ ধরনের ত্রুটি থাকলে তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে যায়। আমরা বিশ্লেষণ করে দেখব, এতে আমলে নেওয়ার কোনো বিষয় আছে কিনা।
শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিত্তিতে আগামীতে বিভিন্ন পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সফরে ত্রুটিগুলো তুলে ধরব, যাতে ২০২৪ সালে এসব ত্রুটি না থাকে। ২০২১ এবং ২০২২ সালের প্রতিবেদনের গুণগত ও কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন নেই। কিছু প্রশংসার জায়গা আছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু উন্নতি যে বাংলাদেশ করেছে, তার প্রতিফলন এতে আছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর যতটুকু ক্ষমতা থাকা দরকার, বাংলাদেশে ঠিক ততটুকুই আছে। ঢালাওভাবে সাংবিধানিক পদকে ছোট করে দেখানো খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে কোনো বন্ধু রাষ্ট্রের সংশয় বা উদ্বেগ প্রকাশের নৈতিক অধিকারই নেই। বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠানকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে, তাদের নিয়েই যেন বন্ধু রাষ্ট্রগুলো সামনের দিনের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাঁরা ইতোমধ্যে প্রতিবেদনে কিছু ভুল পেয়েছেন। গুমের সংখ্যা প্রতিবেদনে ৮১ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এটি হবে ৭৬।