মার্কিন জনগণের মনোভাবের যে পরিবর্তন পছন্দ নয় ইসরায়েলের

0
179
ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে প্রথম কংগ্রেসে কথা বলা শুরু করেন রাশিদা তালিব, ছবি রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে গত ১০ মে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে গেছে। মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য, তাদের কর্মকর্তা–কর্মচারী, কয়েক শ আন্দোলনকর্মী, সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন সিনেট কমিটির কক্ষে। ফিলিস্তিনে নকবার (মহাবিপর্যয়) ৭৫তম স্মরণে এই আয়োজন। ৭৫ বছর আগে ইহুদি মিলিশিয়ারা সহিংস হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখণ্ড থেকে উচ্ছেদ করেছিল। তারা দখল করে নিয়েছিল ফিলিস্তিনের প্রায় তিন–চতুর্থাংশ ভূমি।

‘নকবা ৭৫ ও ফিলিস্তিনি জনগণ’ শিরোনামে খোদ মার্কিন কংগ্রেসে এমন আয়োজন এবারই প্রথম। সবকিছু বিবেচনায় নিলে ফিলিস্তিনি আন্দোলনকর্মীদের জন্য এটা বিরাট এক সাফল্য। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার উৎসস্থলে তাঁরা নিজেদের কথা তুলে ধরতে পেরেছেন। তবে এই আয়োজন করতে তাঁদের কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। শেষ পর্যন্ত সব বাধা ডিঙিয়ে তাঁরা এই আয়োজন করেছেন।

নকবার অনুষ্ঠান আয়োজনের আগের দিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি অনুষ্ঠান আটকে দিতে চেয়েছিলেন। ইউএস ক্যাপিটল ভিজিটর সেন্টারে তিনি সংগঠকদের বুকিং বাতিল করার পক্ষে যুক্তি হিসেবে বলেছিলেন, অনুষ্ঠানে সংগঠকেরা ইহুদি বিদ্বেষ ছড়াতে পারেন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে পারেন।

তবে ম্যাকার্থি ফিলিস্তিনি সংগঠকদের থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এগিয়ে এলেন। তিনি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম ও পেনশন সিনেট কমিটির কক্ষে তাঁদের স্বাগত জানালেন।

ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন এবং শীর্ষ সংগঠকদের অন্যতম হিসেবে আমার জন্য এই অভিজ্ঞতা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাকে অনেক চ্যালেঞ্জের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। মনে করিয়ে দিয়েছে যে আমি ও আমার মতো অনেক ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিনকে এখানে কথা বলতে গিয়ে বেশ বাধার মুখে পড়তে হয়। একই সঙ্গে এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রে দিন বদলাচ্ছে।

কংগ্রেসে নীরব ফিলিস্তিন

ঐতিহাসিকভাবে মার্কিনরা ফিলিস্তিনের প্রতি খুব একটা নজর দেন না, তাদের নিয়ে ভাবেন না। সাধারণত, তাঁরা ইহুদিবাদী বয়ানকে আঁকড়ে থেকেছেন। ইহুদিরা বলে আসছেন, তাঁরা এবং ইউরোপের নির্যাতিত ইহুদিরা যখন আমাদের ভূখণ্ডে বসবাস শুরু করেন, তখন এই অঞ্চল নাকি ‘খালি ভূখণ্ড’ ছিল। ফিলিস্তিনের বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিন ইসরায়েলের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাঁদের দৃষ্টিতে, ফিলিস্তিনিরা ‘সহিসংসতা সৃষ্টি’ করে।

মার্কিন জনগণের এই সমর্থন কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউসেও প্রতিফলিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সব সময় ইসরায়েলের বড় সমর্থক ও জামিনদার। এ পর্যন্ত তেল আবিবকে ওয়াশিংটন ১৫ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে। এই সংখ্যা বলে দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়ে থাকে ইসরায়েল।

যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের উভয় কক্ষে প্রায়ই ইসরায়েলের পক্ষে আইন ও প্রস্তাব পাস হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও তাতে কোনো লাভ হয় না। ইতিমধ্যে মার্কিন সরকার আরব রাষ্ট্রগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাপ দিতে শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে তারা তথাকথিত আব্রাহাম চুক্তির কথা বলছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের প্রভাবশালী লবি আছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদীবাদী ১০টি বড় গ্রুপের হাতে সম্মিলিতভাবে ৫০ কোটি ডলারের তহবিল রয়েছে, যা তারা ইসরায়েলের জন্য ব্যয় করে থাকে। কেবল ২০২২ সালে ইসরায়েলের সমর্থনে তারা মার্কিন কংগ্রেসে ৭ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

অবশ্য কিছু কিছু কংগ্রেস সদস্য আছেন, যাঁরা ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন। উদাহরণস্বরূপ, মিনেসোটার কংগ্রেস সদস্য বেটি ম্যাককোলাম ২০১৭ সালে ‘ইসরায়েলি সামরিক দখলদারিত্ব আইনের অধীনে বসবাসরত ফিলিস্তিনি শিশুদের মানবাধিকার উন্নয়ন’ নামে একটি প্রস্তাব কংগ্রেসে উত্থাপন করেন।

সিনেটে ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন বার্নি স্যান্ডার্স
সিনেটে ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন বার্নি স্যান্ডার্স, ছবি: রয়টার্স

ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও ফিলিস্তিনি অধিকার নিয়ে কথা বলেন। তিনি তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারিতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের আচরণকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি প্রকাশ্যে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের সমালোচনা করেছেন।

তবে ম্যাককোলাম এবং স্যান্ডার্স কংগ্রেসে সংখ্যালঘু। এই ভারসাম্যহীন অবস্থায় কংগ্রেস ও ওয়াশিংটনের মতো জায়গায় ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে কাজ করা, বিশেষ করে সচেতনতা সৃষ্টি, অর্থপূর্ণ আলোচনায় মানুষের অংশগ্রহণ এবং আইন প্রণয়নের মতো কাজ খুবই কঠিন।

পরিবর্তন আসছে

আমি মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নানা কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের চেষ্টা করি। তখন থেকেই আমি নানা চ্যালঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। মানবাধিকার এবং স্বাধীনতার গুরুত্ব নিয়ে শিক্ষা ও রাজনৈতিক অঙ্গনে যতই আলোচনা হোক না কেন, ফিলিস্তিন ঘিরে চারদিকে যে নীরবতা, তাতে নিজেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ মনে হচ্ছিল।

একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন হিসেবে আমার ঐতিহ্য ও সম্প্রদায়ের মানুষের সংগ্রামের স্বীকৃতি এবং ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিচার পাওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। কলোরাডোয় কলেজে অধ্যয়নের শেষ দিকে আমি রাজ্যের আইনসভায় কাজ করতে শুরু করলাম। সেখানেও ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হচ্ছিল। বিষয়টি আমাকে সত্যিই হতাশ করেছিল, তবে আমার কাছে এটাই প্রত্যাশিত ছিল।

২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদে রাশিদা তালিব নির্বাচিত হওয়ার আগপর্যন্ত মার্কিন রাজনীতিতে ফিলিস্তিন শব্দ যেন এক অভিশাপ ছিল। প্রথম ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন হিসেবে তিনি কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচিত হন। কংগ্রেসে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলার দরজা তিনিই প্রথম খুলে দিলেন।

ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে, তখন থেকে পরিবর্তন শুরু হয়েছে। এর তিন বছর পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কলোরাডো রাজ্যের আইনসভায় প্রথম ফিলিস্তিনি মার্কিন নারী ইমান জোদেহ নির্বাচিত হওয়ার পর রাজ্যের রাজনীতিতেও পরিবর্তন আসতে থাকে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে তাঁর উচ্চকিত কণ্ঠ আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে, মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন সম্ভব।

বেশ কয়েক মাস পর পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায় ইসরায়েল জাতিগত ফিলিস্তিনিদের নিধন ও উচ্ছেদের মতো ভয়ংকর তৎপরতা শুরু করলে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমবারের মতো দুই ফিলিস্তিনি মুনা ও মোহাম্মদ আল–কুর্দ যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধারার রাজনীতিতে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা ইসরায়েলি বয়ানকে চ্যালেঞ্জ জানান। মার্কিন গণমাধ্যমে তাঁদের কথা কিছু কিছু আসতে থাকল। এরপরই পশ্চিমা গণমাধ্যম ও রাজনীতিকেরা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার দিকে নজর দিল।

বসন্তে ইসরায়েলের ভয়ংকর অপরাধ সংঘটনের পরিপ্রেক্ষিতে সারা বিশ্বে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ২০২১ সালের গ্রীষ্মে মার্কিন জনগণের মানসিকতায় বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থকদের মনোভাবে বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ২০২৩ সালের গ্যালাপ জরিপে দেখা যায়, ৪৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ইসরায়েলিদের চেয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল। এক বছর আগেও এই হার ছিল ৩৮ শতাংশ।

ফিলিস্তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষায় কংগ্রেসে প্রস্তাব তোলেন বেটি ম্যাককোলাম
ফিলিস্তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষায় কংগ্রেসে প্রস্তাব তোলেন বেটি ম্যাককোলাম, ছবি: এএফপি

মার্কিনদের এই যে মনোভাবের পরিবর্তন, এটাই আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে ফিলিস্তিনিদের। মার্কিন পাওয়ার হাউসে তাঁদের পক্ষে লবিংয়ের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে আমেরিকান ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন অ্যাকশন (এজেপি অ্যাকশন) গঠন করা হয়েছে।

২০২২ সালে এজেপি অ্যাকশন কংগ্রেসে ফিলিস্তিনি অধিকারের ইস্যুটি তুলতে রেকর্ডসংখ্যক ৮০৩ মার্কিনের সমর্থন পেয়েছিল। ওই সময় সংগঠনের নেতারা কংগ্রসের ১৩০ সদস্য ও কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

গত বছর ইসরায়েলে বিদেশি সহায়তায় বিধিনিষেধ আরোপ করতে এইচআর ২৫৯০ বিল উত্থাপন করা হয়েছিল। এজেপি অ্যাকশন এই বিলের প্রতি সমর্থন জানায় এবং বিলটি পাসে লবিং করে। তারা ৩২ পৃষ্ঠপোষক সংগ্রহ করতে পেরেছিল, যা মাত্র এক বছর আগেও অকল্পনীয় ছিল।

এসব সাফল্য কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমাকে নিজের প্রতি আরও বেশি আস্থাশীল করে তুলেছে। কংগ্রেসে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কাজ করা এখনো বিরাট এক লড়াই, তবে অসম্ভব নয়।

১০ মে আমাদের আয়োজন সেই কথার প্রমাণ দিয়েছে। প্রথমবারের মতো কংগ্রেসে নকবায় বেঁচে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের মুখে সে সময়ের ভয়াবহ স্মৃতির কথা উঠে এসেছে। তাদের দুঃখ–দুর্দশা, কষ্টের কথা উঠে এসেছে। ভূমি নিয়ে ফিলিস্তিনিদের ভালোবাসা ফুটিয়ে তোলা মাহমুদ দারবিশের কবিতা ‘অন দিস ল্যান্ড’ আবৃতি করা হয়েছে।

ক্যাপিটল হিলে নকবার স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন আমাদের চলমান সংগ্রামের স্বীকৃতি এবং বিচার আদায়ের পথে এক বিরাট মাইলফলক। আমাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা সত্ত্বেও আমরা নিজেদের কণ্ঠকে উচ্ছ্বকিত করেছি। আমরা এমন সব জায়গায় গেছি, যা আমাদের নিন্দুকেরা প্রত্যাশাও করেননি।

নকবা বা মহাবিপর্যয় ১৯৪৮ সালে শেষ হয়ে যায়নি। এখনো সেই মহাবিপর্যয় চলছে। এখনো ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি জাতিগোষ্ঠীকে নিধন ও হত্যা করা হচ্ছে। তবে আমরা দেখতে পারছি, ইসরায়েলি নৃশংসতার জবাব দিতে একটি শক্তি প্রস্তুত হয়ে গেছে, এমনকি সেই জবাব ক্যাপিটল হিলে দেওয়ার মতো শক্তিও এখন আমাদের রয়েছে।

এটাই হচ্ছে তৃণমূল সংগঠনের শক্তি। এটাই হচ্ছে উপস্থাপনার গুরুত্ব। এটাই হচ্ছে ফিলিস্তিনি মার্কিনদের ঘুরে দাঁড়ানো।

ফিলিস্তিনি অধিকার আন্দোলনের সমর্থকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ছাড়া এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হতো না। তাঁরা আমার অনেক আগে থেকে কাজ শুরু করেছেন। আমরা তাঁদের সেই চেতনাকে লালন করে যাব। আমরা ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনিদের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব, যেখানে তারা আর প্রান্তিক বা বিস্মৃত জনগোষ্ঠী হয়ে থাকবে না। ভবিষ্যতে তারা হবে স্বীকৃত, শ্রদ্ধেয় এবং স্বাধীন জাতি। সামনের পথে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। তবে দৃঢ় সংকল্প, সংহতি আর মিত্রদের সমর্থন নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সামনে ফিলিস্তিনের উজ্জল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.